অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে এক বিএনপি নেতার ষড়যন্ত্র

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের পিপলিতা গ্রামের কৃষক লীগ নেতা খালেক ডাকুয়ার দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ভাঙচুর চালিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় হামলাকারীরা কৃষক লীগ নেতার স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে বাজারে তাদের ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়।

জবরদখলকারী জেলা বিএনপির উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম খানের পক্ষ নিয়ে সৈয়দ মিলন ও তার অনুসারীরা এ তাণ্ডব চালায়। এ ঘটনায় ১২ জানুয়ারি ১৬ জনকে আসামি করে ঝালকাঠি থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালায় পুলিশ।

অন্যদিকে মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্বজনরা ঢাকা ও বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার পিপলিতা বাজারে ১৫ শতাংশ জমি নিয়ে খালেক ডাকুয়ার সঙ্গে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম খানের বিরোধ চলছিল। জমির মধ্যে খালেক ডাকুয়ার দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ জমি কয়েক দফায় দখলের চেষ্টা করে জাহাঙ্গীর। বিরোধীয় জমি নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন খালেক ডাকুয়া। হাইকোর্ট জমির ওপর স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। খালেক ডাকুয়া ঢাকার টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় গেলে সেই সুযোগে জাহাঙ্গীর আলম খান লোকজন নিয়ে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে মালামাল লুটে নেয়। এতে বাধা দিতে গেলে খালেকের স্ত্রী রেহানা বেগম হামলাকারীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। এমনকি তার সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকারও ছিনিয়ে নেয়া হয়। হামলাকারীরা এসময় রেহানা বেগমের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে পিপলিতা বাজারে ব্যবসা করতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় রেহানা বেগম বাদী হয়ে ১২ জানুয়ারি ঝালকাঠি থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নেয়ার পর পুলিশ নির্যাতিত কৃষক লীগ নেতার পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। এতে ক্ষিপ্ত হয় সৈয়দ মিলন ও বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর খান। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং পুলিশ কর্মকর্তা এম এম মাহমুদ হাসানকে জড়িয়ে ঢাকা ও বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করে।

মামলার বাদী রেহানা বেগম বলেন, পুলিশ সৈয়দ মিলনকে সহযোগীসহ গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছে অস্ত্র পেয়েছে। মামলা হয়েছে। কিন্তু এরপরেও জাহাঙ্গীর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী থেমে নেই। তারা আমাদের এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহমুদ হাসান একজন ভালো পুলিশ কর্মকর্তা। তাকে বিতর্কিত করার জন্য মিথ্যা নাটক সাজিয়ে বিভিন্নস্থানে অভিযোগ দিচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম খান হামলা ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করে অভিযোগ করে বলেন, জীবনবাজি রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও এখন বিনা অপরাধে মিথ্যা-বানোয়াট চাঁদাবাজি মামলায় পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

এ বিষয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এমএম মাহমুদ হাসান বলেন, জনতাকে আইনি ও পুলিশি সেবা দেয়া আমার কর্তব্য। মানুষের কল্যাণে আমি নিজেকে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দিয়ে সেবা করে যাচ্ছি। এতে একটি মহল আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ঝালকাঠিবাসীর দোয়ায় আমার বিরুদ্ধের ষড়যন্ত্র বিফলে যাবে। সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আতিক রহমান/এমএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।