ভয় পাবেন না, আমি আপনাদের এসপি খাবার নিয়ে এসেছি
সারারাত ঘুরে ২৫০টি দরিদ্র পরিবারে খাদ্য সহায়তা করলেন যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন। শনিবার দিবাগত রাতে শহরের শংকরপুর এলাকায় খাদ্য উপকরণ নিজ হাতে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন তিনি।
রাত পৌনে ৩টার দিকে যশোর শহরের ইসহাক সড়কের দরিদ্র পল্লীর এক বাড়িতে দরজায় কড়া নাড়লে আচমকা ভয়ে লাফিয়ে উঠেন রিকশাচালক হামিদ গাজী (৫৬)। তখনই বাইরে থেকে বললেন, প্লিজ ভয় পাবেন না, আমি আপনাদের জেলার এসপি। আপনাদের জন্য খাদ্য সহায়তা নিয়ে এসেছি। তবুও ভয়ে ভয়ে দরজা খুলে দেখেন সত্যিই স্বয়ং এসপিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা প্যাকেট ভর্তি খাদ্যদ্রব্য নিয়ে হাজির হয়েছেন।
এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে করোনা মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন। এজন্য আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সাহায্যের পাশাপাশি তিনিও (এসপি) সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে যান পাশের বাড়িতে।
হামিদ গাজী ও তার স্ত্রী প্যাকেট খুলে দেখলেন তাতে চাল, ডাল, তেল এবং সাবান রয়েছে। এ সময় আবেগ ধরে রাখতে না পেরে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, যে পুলিশের ভয়ে থাকি, সেই পুলিশ এই দুর্দিনে খাবার নিয়ে হাজির। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর এসপি স্যারের প্রতি আল্লাহর কাছে দোয়া রইলো। শুধুমাত্র হামিদ গাজী নন, এসপি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন রাতভর শহরের নাজির শংকরপুর-ইসহাক সড়কসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে ২৫০ দরিদ্র পরিবারের কাছে নিজ হাতে খাদ্য সহযোগিতা প্রদান করেন।
জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নভেল করোনা ভাইরাসে সৃষ্ট লকডাউনের কারণে সমাজের খেটে খাওয়া দরিদ্র শ্রেণির মানুষের অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে এসপি নিজ উদ্যোগেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, অসহায় মানুষদের পাশে থাকা অতি আনন্দের। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আমাদের এ কার্যক্রম চলতে থাকবে।
এসপি সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমার অনুরোধ এ পরিস্থিতে অসহায় লোকজনের পাশে দাঁড়াবেন।
খাদ্য সহায়তা বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো. গোলাম রব্বানী শেখ, (খ-সার্কেল) জামাল আল-নাসের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. অপু সরোয়ার প্রমুখ।
মিলন রহমান/এমএএস/এমএস