করোনায় ঘরবন্দি মানুষের চিকিৎসায় মেডিকেল টিম করবে সেনাবাহিনী
করোনার কারণে যেসব মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না ও করোনার বাইরে অন্যান্য রোগে যারা আক্রান্ত আছেন তাদের চিকিৎসার জন্য ছোট ছোট মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা সহায়তা দেবে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবীর আহমেদ রোববার (২৯ মার্চ) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, করোনার বাইরে অনেকেই চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাদের সেবায় অচিরেই সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম কাজ করবে। তারা মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা দেয়ার চেষ্টা করবে। সিভিল সার্জনের চিকিৎসকদের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর চিকিৎসকরা দেশের দুর্যোগময় সময়ে অতীতের মতো মানুষের পাশে থাকবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবীর আহমেদ বলেন, যশোর জেলায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী পাওয়া যায়নি। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়। আমরা জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি তারা যেন অযথা বাইরে ঘোরাফেরা না করে। আমাদের সবগুলো পেট্রোল জনসচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা এসব কার্যক্রম করে যাচ্ছি।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ, পুলিশ সুপার আশরাফ উদ্দীন, সিভিল সার্জন ডা. আবু শাহিন এবং সেনাবাহিনীর যশোর জেলার ইনচার্জ লে. কর্নেল নেয়ামুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মকর্তারা এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানকার সভার বিষয়ে লে. কর্নেল নেয়ামুল হক বলেন, আমরা মূলত ছয়টি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে বাজারের সামনে হট্টগোল কমিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। এক্ষেত্রে দেখা যায় আমাদের টহল চলে আসার পর সেই আগের মতোই জটলা থেকে যায়। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের যুক্ত করা হচ্ছে, যেন কাজটা সফল হয়। দোকানের সামনের মার্কিং দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যেন দূরত্ব বজায় রাখা যায়।
তিনি বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে সমন্বয় করে মসজিদে সমাগম কম করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
যশোর সদর হাসপাতাল, চৌগাছা, শার্শা ও কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে লে. কর্নেল নেয়ামুল হক বলেন, বিশেষ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর জরুরি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত কোনো রোগীর জন্য এক্স-রে, ইসিজি, নেবুলাইজারসহ অক্সিজেন ব্যবহার করা হলে অন্য রোগীদের জন্য আর সেসব মেশিনপত্র ব্যবহার করা যাবে না। এজন্য সংসদ সদস্যদের সহযোগিতায় এসব সামগ্রী সংগ্রহ করে পৃথক করা হচ্ছে।
এর বাইরে বেশি আক্রান্ত হলে তার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বর্তমান পরিস্থিতিকে ধরে রাখতে পারলে করোনা যুদ্ধে জয়ী হওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মিলন রহমান/আরএআর/এমএস