সাতক্ষীরায় ফিরেছে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ, করোনা ঝুঁকিমুক্ত নয়
সাতক্ষীরা জেলা থেকে রোববার পর্যন্ত আইইডিসিআরকে ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে দুইজনের রিপোর্টের ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। এখনও ১০ জনের ফলাফল পাওয়া বাকি রয়েছে।
ইতোমধ্যে আইইডিসিআরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং থেকে জানানো হয়, করোনা কিছুটা কমিউনিটি সংক্রমণে ছড়িয়ে পড়েছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, দেশের বিভিন্নস্থানের মতো সাতক্ষীরাও করোনা ঝুঁকিমুক্ত নয়। কেননা, এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে সাতক্ষীরায় ফিরেছে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ। ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকেও এসেছে এরমধ্যে অধিকাংশ মানুষ। ভারতেও করোনা ছড়িয়েছে পড়েছে। বাংলাদেশের মতো ভারতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়েই স্বাস্থ্য বিভাগ পর্যাপ্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। রোববার পর্যন্ত জেলার বিভিন্নস্থানে ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরকে পাঠানো হয়েছে। তারমধ্যে দুইজনের নেগেটিভ এসেছে। এখনও ১০ জনের রিপোর্ট হাতে পেতে বাকি রয়েছে।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে সাতক্ষীরা সদরের বল্লী ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে সাতদিন জ্বরে আক্রান্ত থাকার পর এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সেটিকে আমরা করোনা সংক্রমণে তার মৃত্যু হয়েছে বলতে চাই না। নমুনা সংগ্রহ করে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। সতর্কতা হিসেবে পাঁচটি বাড়ি ও আশপাশের এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।
করোনা রোগীর চিকিৎসা দানের জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত পিপিই চলে এসেছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা চিকিৎসাদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে আমরা প্রস্তুত করেছি। এরপরও যদি করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে তবে যশোর বা খুলনা থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতা চাইবো আমরা।
গত পহেলা এপ্রিল বুধবার ভোররাতে জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় এক নারীর (৩২) মৃত্যু হয়েছে। তবে তার কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।
এ মৃত্যুর ঘটনায় কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান জানিয়েছিলেন, ওই নারী বুকে ব্যথার কারণে মারা গেছেন। তার শরীরের করোনার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। নমুনাও সংগ্রহ করা হয়নি। করোনা উপসর্গ না থাকায় মরদেহটি দাফনের জন্য বলা হয়েছে। তবে মৃতের পরিবারের দাবি ছিল, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশিতে টানা সাতদিন ভুগছিলেন ওই গৃহবধু।
এদিকে, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা তিন হাজার মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অথচ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন দশ হাজারের অধিক মানুষ।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, ১৪ মার্চ থেকে হোম কোয়ারেন্টাইন শুরু করেছি আমরা। এর আগেও অনেকে বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ ১৪ দিন সম্পন্ন করায় তাদের ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছি।
আকরামুল ইসলাম/এমএএস/এমএস