বৃদ্ধা মাকে ঘরছাড়া করলেন ছেলেরা, খাবার পাঠালেন চেয়ারম্যান
করোনা সন্দেহে ঘর থেকে বের করে দেয়া সেই বৃদ্ধা অমত্য বালা দাসের জন্য খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়েছেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে নিয়ামতপুর গ্রামের সেই বৃদ্ধাকে বাড়িতে নিয়ে যান হবিবপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুব্রত সরকার। একই সঙ্গে বৃদ্ধাকে ১০ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, চার কেজি আলু, এক কেজি চিড়া, দুটি সাবান ও ২৫০ গ্রাম গুড় দেন সুব্রত সরকার।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী বৃদ্ধাকে ঘরে রাখতে ছেলেদের অনুরোধ জানানো হয়। বৃদ্ধা মাকে যাতে কোনোভাবে ঘর থেকে বের করে দেয়া না হয় সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয় ছেলেদের। পরে ছোট ছেলে রনধীর দাস মাকে ঘরে থাকার জায়গা করে দেন।
এর আগে সুনামগঞ্জে অন্য জেলা থেকে আসা গামের্ন্টস কর্মীর বাড়িতে যাওয়ায় করোনা সন্দেহে বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে দেন ছেলেরা। ফলে গত দুদিন ধরে ঘরের বাইরে ঘুরে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করে জীবন পার করছেন অমত্য বালা দাস (৯০) নামের ওই বৃদ্ধা।
মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল শাল্লা উপজেলার সাংবাদিক জয়ন্ত সেন তার ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়।
হবিবপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুব্রত সরকার বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের দেয়া খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আমি বৃদ্ধা মায়ের বাড়িতে যাই। বৃদ্ধার ছোট ছেলের ঘরে তাকে রেখে এসেছি। বৃদ্ধার ছেলেদের শাসন করেছি। বৃদ্ধা মাকে বলে এসেছি এক ছেলে খাবার না দিলে আপনার আরেক ছেলে আছে। কেউ খাবার না দিলে আপনি আমাকে বলবেন। আমি খাবার নিয়ে আবার আসব।
উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, আমি বৃদ্ধা মায়ের জন্য খাবার পাঠিয়েছি। তার ছেলেদের বলে দিয়েছি মায়ের খেয়াল রাখতে হবে। এমন ঘটনা পুনরায় ঘটলে ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ছেলেদের সঙ্গে মায়ের ঝগড়া হওয়ায় এমনটি ঘটেছে। কিন্তু মাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া ঠিক হয়নি ছেলেদের। আমি তাদের শেষবারের মতো বলেছি; ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।
মোসাইদ রাহাত/এএম/এমএস