চুয়াডাঙ্গায় শপিং মল চালুর ক্ষেত্রে এসপির ১৪ নির্দেশনা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ০৮ মে ২০২০

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দেশে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। খুলে দেয়া হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের পোশাক কারখানা। শর্ত সাপেক্ষে শপিং মলও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা বিরাজ করছে। শপিং মলগুলো চালু করার ফলে যেন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি না পায় সেজন্য ১৪টি নির্দেশনা দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জাহিদুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৭ মে) চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

পুলিশ সুপারের দেয়া নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-

১. সরকার ঘোষিত নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শপিং মল ও দোকান খোলা রাখা যাবে। তবে ফুটপাতে বা প্রকাশ্য স্থানে হকার, ফেরিওয়ালা বা অস্থায়ী দোকানপাট বসতে দেয়া যাবে না।

২. করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ক্রেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শপিং মলে ঘোষিত সময়ের মাঝে কেনাকাটা করতে পারবেন। এক এলাকার ক্রেতা অন্য এলাকায় অবস্থিত শপিং মলে কেনাকাটা বা গমন করতে পারবেন না।

৩. বসবাসের এলাকা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রত্যেক ক্রেতা তার নিজ নিজ পরিচয়পত্র (যেমন-ব্যক্তিগত আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির বিলের মূল কপি ইত্যাদি) বহন করবেন এবং তা শপিং মলের প্রবেশ মুখে প্রদর্শন করবেন।

৪. প্রত্যেক শপিং মলের প্রবেশমুখে স্বয়ংক্রিয় জীবাণুনাশক টানেল বা চেম্বার স্থাপন করতে হবে এবং তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়া, প্রত্যেক দোকানে পৃথকভাবে তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৫. প্রতিটি শপিং মলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। মাস্ক পরিধান ব্যতীত কোনো ক্রেতা দোকানে প্রবেশ করতে পারবেন না। সব বিক্রেতা ও দোকান কর্মচারীকে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করতে হবে।

৬. প্রতিটি শপিং মল/বিপণী বিতানের সামনে সতর্কবাণী ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, মৃত্যু ঝুঁকি আছে’ সংবলিত ব্যানার টানাতে হবে।

৭. প্রতিটি শপিং মলে প্রবেশ, বাহির ও কেনাকাটার সময় ক্রেতা-বিক্রেতাকে কমপক্ষে এক মিটার (প্রায় ৪০ ইঞ্চি) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দোকানে যত জন ক্রেতা অবস্থান করতে পারেন তার বেশি ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।

৮. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রত্যেক দোকানের সামনে দূরত্ব মেপে মার্কিং করতে হবে।

৯. শপিং মলগুলোতে বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থদের (হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য) যাতায়াত নিরুৎসাহিত করতে হবে।

১০. কেনাকাটা শেষে মার্কেটে অযথা জটলা বা ভিড় সৃষ্টি করা যাবে না। যাদের কেনাকাটা শেষ হয়ে যাবে মার্কেট কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে তাদের বের করে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন।

১১. শপিং মলগুলোতে প্রবেশ ও বের হওয়ার আলাদা পথ নির্ধারণ করে দিতে হবে।

১২. যারা মাস্ক না পরে আসবেন তারা মার্কেট থেকে কিনে নেবেন। অন্যথায় যাতে মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৩. প্রত্যেক শপিং মলের পার্কিং লটে গাড়ি জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া, ড্রাইভাররা যাতে একত্রিত হয়ে আড্ডা না দেয় এবং নিজ নিজ গাড়িতে অবস্থান করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. শপিং মলগুলোতে যাতায়াতের জন্য সীমিত পরিসরে সাধারণ রিকশা ও সিএনজি চালু থাকবে। তবে সিএনজিতে দুই জনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে নিরুৎসাহিত করা হলো। প্রত্যেক যাত্রী এবং চালক মাস্ক পরিধান করবেন।

চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, ঈদকে সামনে রেখে লকডাউন শিথিলের কারণে যাতে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয় সেজন্য এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো ব্যবসায়ী এসব নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। করোনার এ সময়ে কোনো কাজ ছাড়া ঘর হতে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

সালাউদ্দীন কাজল/আরএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।