লকডাউনের মধ্যে প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী বাংলাদেশে
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের মধ্যে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় এক ভারতীয় তরুণী কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে গোপনে বিয়ে করেছেন। অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসা ওই তরুণীকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
শনিবার (০৬ জুন) গভীর রাতে উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের কাঁঠালতলা এলাকায় বাংলাদেশি এক যুবকের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ওই তরুণীকে বিয়ে করেন। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেছেন ভারতীয় ওই তরুণী। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে তরুণীকে উদ্ধারে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু এলাকার ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ওই তরুণীকে অন্যত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনদিন আগে সাদ্দাম হোসেন ও তার বড় ভাই ফল ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া ভারতীয় তরুণীকে দহগ্রাম ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। সেদিন থেকে আত্মীয় পরিচয়ে তাকে তাদের বাড়িতে রাখা হয়।
এরপর শনিবার রাতে ভারতীয় ওই তরুণীর সঙ্গে গোপনে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। এরই মধ্যে অবৈধ পথে ভারতীয় তরুণীর বাংলাদেশে আসার খবরের সত্যতা জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাবলুর সহযোগিতায় ভারতীয় তরুণী ও যুবক সাদ্দামকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়। পরে বাউরা ইউনিয়নের কাঁঠালতলা এলাকার আবু তালেব ও শাহজাহানের বাড়িতে নিয়ে গোপনে বিয়ে পড়ান ইউনিয়ন কাজি একে এম ফজলুল হক। বিয়ের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানেও অভিযান চালায়। কিন্তু এর আগেই ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন তারা।
তবে বিয়ে পড়ানোর কথা অস্বীকার করে বাউরা ইউনিয়নের কাজি একেএম ফজলুল হক বলেন, আমি ভারতীয় ওই তরুণীর সঙ্গে কারও বিয়ে রেজিস্ট্রি করিনি। যেহেতু তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, তাই বিয়ে পড়ানোর সুযোগ নেই।
ভারতীয় তরুণীকে ভাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাবলু বলেন, ইউএনওর ফোন পেয়ে ওই বাড়িতে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পারি। কিন্তু সেখানে গিয়ে ভারতীয় ওই তরুণীকে পাইনি। পরে বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবগত করেছি।
পাটগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে ভারতীয় তরুণীর বিয়ে হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। পরে আরেক সূত্রে জানা যায়, কাঁঠালতলা এলাকায় আবু তালেবের বাড়িতে তরুণীকে রাখা হয়েছে। পরে সেখানেও অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মশিউর রহমান বলেন, এডিএম স্যার ফোনে ভারতীয় তরুণীর সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের বিয়ের বিষয়ে জানান। পরে সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পারি। তবে পুলিশের উপস্থিতি জানতে পেরে পালিয়ে গেছে তারা।
রবিউল হাসান/এএম/এমকেএইচ