কুমিল্লায় করোনার উপসর্গ নিয়ে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ০৯:০৬ পিএম, ১১ জুন ২০২০

কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে গোলাম মোস্তফা নামের এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি জেলার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের কাশারীখোলা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।

মোস্তফা দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার চান্দিনা প্রতিনিধি এবং চান্দিনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। একই উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কিংকর সাহা নামের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী।

এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মচারী এবং মুরাদনগরে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে জেলায় নতুন করে আরও ২৭ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৩০ জনে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুসারে করোনায় নতুন ২৭ আক্রান্তের মধ্যে নগরীতে ৭ জন, চৌদ্দগ্রামে ১৪, আদর্শ সদর-৫ ও বুড়িচংয়ে একজন।

মৃত্যু হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মচারী ও মুরাদনগরে এক ব্যক্তি। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১৩ হাজার ৩৮৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্ট এসেছে ১১ হাজার ২৫৭ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৬৩০ জন।

এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছে ২৭৫ জন। নতুন দুজনের মৃত্যুসহ এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৮ জন।

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) গাজী মাহমুদুল হাসান জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে জেলার চান্দিনায় গোলাম মোস্তফা নামের এক সাংবাদিক মারা গেছেন।

ওই সাংবাদিকের শরীরে করোনার উপসর্গ ছিল। তাই মৃত্যুর পর তার মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন চান্দিনা বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী কিংকর সাহা (৫৫)। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তিনি মারা যান।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে সাংবাদিক মোস্তফার দাফন এবং সাহাপাড়া জয়মা কালীমন্দির শ্মশানে কিংকর সাহার সৎকার সম্পন্ন করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা লিটন সরকারের নেতৃত্বাধীন সেচ্ছাসেবী টিম।

দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম খান জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন স্থানীয় মাশিকাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারী জহিরুল ইসলাম।

তার করোনা পজিটিভ আসায় পরিবারের সদস্যরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর বুধবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়িতে নেয়ার পর গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও জানান, আমি নিজেই উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামের বাড়িতে জহিরের মরদেহ দাফন করি।

এদিকে গত ৩ জুন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ শয্যাসহ ১৫৪ শয্যাবিশিষ্ট ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের কার্যক্রম চালুর পর থেকে সেখানে রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। জেলায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই গড়ে অন্তত শতাধিক রোগী সেখানে চিকিৎসা নিতে আসছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান জানান, করোনা ইউনিটে বর্তমানে ১০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। রোগীদের তুলনায় তা অনেক কম। কোনো দিনই আইসিইউ বেড খালি থাকে না। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে আইসিইউসহ ৮০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে উপসর্গ ও পজিটিভ রোগীসহ মারা গেছেন ৭ জন।

কামাল উদ্দিন/এমএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।