শেরপুরে হাতি তাড়ানোর কোটি টাকার বৈদ্যুতিক বেড়া পড়ে রয়েছে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ২১ জুন ২০২০

শেরপুরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে হাতি তাড়াতে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক বেড়া স্থাপনের প্রকল্প। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়নে তদারকির মানুষ না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না এটি। যে কারণে হাতির আক্রমণের শঙ্কায় লাখো মানুষ দিন পার করছে।

শেরপুরের সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ি ও ঝিনাইগাতী উপজেলার বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত গারো পাহাড়। এ পাহাড়ি এলাকার মানুষের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ভারতীয় বন্য হাতি। হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা ও আফ্রিকার দেশগুলোর আদলে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী সীমান্তের ১৩ কিলোমিটারজুড়ে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে তার দিয়ে বেড়া নির্মাণ করে বনবিভাগ। কিন্তু পরিকল্পনা ও লোকবলের অভাবে এ প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ায় গচ্ছা গেছে সরকারের কোটি টাকা। প্রথমদিকে কাজে এলেও তদারকির মানুষ না থাকায় অকেজো হয়ে আছে সোলার ফ্যান্সিং।

সম্প্রতি আবারও হাতির দল তাণ্ডব চালানো শুরু করেছে সীমান্তে। তাই এ মৌসুমেই কার্যকরের দাবি স্থানীয়দের।

কৃষক প্রফুল্ল মারাক বলেন, প্রতিবছর ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির পাল খাদ্যের সন্ধানে এসব এলাকায় হানা দেয়। বিশেষ করে ইরি, বোরো ও আমন মৌসুমে হাতির আনাগোনা বেড়ে যায়। পাঁকা ধান খেতে ফসলের মাঠে হামলে পড়ে হাতির দল। এছাড়া কাঁঠাল, কলা, লাউ, চাল কুমড়া ও বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি বাগানে প্রবেশ করে ওইসব সবজি খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে হাতির পাল।

jagonews24

শিক্ষক জনাদন বানোয়ারী বলেন, সোলার ফ্যান্সিংগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাতিরা লোকালয়ে অবাধে বিচরণ করছে। এলাকাবাসী এখন দিনে ও রাতে সমানভাবে আতঙ্কে থাকে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।

শ্রীবরদী ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, জেলার শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা পাহাড়ি অঞ্চলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায় ও বাঙালি মিলে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের বাস। ভারতের বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে চলে আসা বন্য হাতির তাণ্ডব রুখতে গিয়ে ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাতির আক্রমণে প্রায় ৮০-৯০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪০০ একর জমির ফসল। অনাবাদি রয়েছে বিপুল পরিমাণ জমি। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার ফ্যান্সিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার।

সোলার ফ্যান্সিং অকেজো থাকার কথা স্বীকার করে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, প্রকল্পটি পুনরায় চালু করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে বাজেট পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলেন বনবিভাগের শেরপুর অঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) প্রশান্ত কুমার।

এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।