ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ দিন পর আসে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আরও পাঁচজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দিনাজপুর ও রংপুরের পিসিআর ল্যাবে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে জেলায় ১৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হলো।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা পরীক্ষা নিয়ে পড়েছে বিপাকে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯৪ জন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত সবাইকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বর্তমানের হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮৯ জন। জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ১৬ এপ্রিল। এরপর একে এক জেলায় ১৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত জেলায় দুই হাজার ৪৬০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে পিসিআর ল্যাব না থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলার মানুষের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হয় দিনাজপুর অথবা রংপুরে। এতে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে সময় লাগছে ৯-১০ দিন। ফলে নমুনা দেয়া ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কি-না স্বল্প সময়ে জানতে পারছেন। তিনি অবাধে ঘুরছেন। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা নিজে যেমন সংক্রমিত হচ্ছেন তেমনি অন্যদেরও সংক্রমিত করছেন। এতে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে দিনাজপুর ও রংপুরে পাঠানো হয়েছে। এখনও পাঁচ শতাধিক নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসেনি। ফলাফল আসতে সময় লাগছে ৯-১০ দিন। এ সময়ের মধ্যে নমুনা দেয়ার পর সম্ভাব্য করোনা রোগীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে। তাদের কোনো মনিটরিং নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের শরীরে তেমন উপসর্গ না থাকায় অনেকে বুঝতেও পারছেন না তিনি করোনা পজিটিভ কি-না। ফলে ওই ব্যক্তি নিজের পরিবারসহ অন্যদের সংস্পর্শে গিয়ে করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও বীমার শাখা প্রধানরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। নমুনা দিতে গিয়ে দিতে পারছি না। আমাদের এখানে নয় সেখানে পাঠানো হয়। তারপরও নমুনা দিতে পারলে ফলাফলের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রথমদিকে আমাদের নমুনা পাঠানোর দুইদিনের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল এসেছে। দিনে দিনে নমুনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলাফল আসতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। জেলায় ল্যাব হলে বেশি বেশি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, যেহেতু আমাদের বড় আধুনিক সদর হাসপাতাল আছে, সেখানে ল্যাব স্থাপন করা যেতেই পারে। তাছাড়া আশপাশের জেলার রোগীরা ঠাকুরগাঁওয়ে সেবা গ্রহণ করে থাকে। সদর হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের ব্যাপারে আমি চেষ্টা করছি।
আরএআর/পিআর