খুলনায় করোনা ও উপসর্গে শিক্ষিকাসহ ৫ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা
প্রকাশিত: ০৯:৪৩ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২০

খুলনায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে একজন শিক্ষিকাসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়, বাকি ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গে।

সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খুমেক হাসপাতাল ও করোনা হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া খুলনার ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।মঙ্গলবার রাতে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

খুলনা করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে করোনা আক্রান্ত মির্জা খুরশিদা আক্তার চম্পা (৫৬) মৃত্যুবরণ করেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৬ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তিনি নগরীর ৯ রামচন্দ্র দাস লেনের মোল্লা আলিম হোসেনের স্ত্রী।

এ বিষয়ে খুলনা মহানগর মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক পরিষদের সভাপতি এম এ ওহাব বুলবুল জানান, মৃত খুরশিদা আক্তার নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকাস্থ খুলনা কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। এছাড়া তিনি বয়রা এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম মির্জা খয়বার হোসেনের বড় মেয়ে।

খুমেক হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও আইসোলেশন ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান জানান, সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা করোনার উপসর্গ নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন, দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা এলাকার শামসুল হকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৮), যশোরের মনিরামপুরের মহাদেবপুর এলাকার আব্দুল খার ছেলে মতিয়ারের (৪৫), যশোরের কোতোয়ালি থানার ষষ্ঠীতলা এলাকার মৃত হাজারীলাল রায়ের পুত্র দিলীপ রায় (৬৪) ও খালিশপুর থানার নয়াবাটি এলাকার আ. বাসিন্দা সাত্তারের ছেলে মো. আব্দুল হালিম (৩৭)।

তিনি আরও জানান, সোমবার দিবাগত সোয়া ১২টার দিকে দৌলতপুরের মোহাম্মদ আলী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ওইদিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।

রাত ৩টার দিকে মৃত্যু হয় যশোরের মনিরামপুরের মতিয়ারের। তিনিও করোনা উপসর্গ নিয়ে সোমবার রাতে ভর্তি হয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। একইদিন দিবাগত রাতে করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয়েছে যশোরের কোতোয়ালি থানার দিলীপ রায়ের। তিনি জ্বর শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে সোমবার বিকেলে খুমেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ দু’জন করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এছাড়া গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মৃত্যু হয় খালিশপুর থানাধীন নয়াবাটি এলাকার আব্দুল হালিমের। গত কয়েকদিন ধরে জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভুগে সোমবার হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টায় তিনি মারা যান। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়য় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আরটি-পিসিআর ল্যাবে আরও ১০৯ জনের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১০৫ জনই খুলনা জেলা ও মহানগরীর। মঙ্গলবার তাদের নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। খুমেকের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, খুমেকের আরটি-পিসিআর মেশিনে সোমবার মোট ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনার নমুনা ছিলো ২৪০টি। এদের মধ্যে মোট ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। যার ১০৫ জন খুলনার। এছাড়াও খুমেকের ল্যাবে সাতক্ষীরার ২ জন, যশোর ও মাগুরার একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে।

আলমগীর হান্নান/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।