কোরআন পড়া অবস্থায় আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করল তারা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
প্রকাশিত: ০৭:৪৭ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২০

৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নড়াইল সদর উপজেলার রাজ্জাক মল্লিক (৭৫) হত্যার ঘটনায় মামলা হয়নি। সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর জায়নামাজে বসে কোরআন শরিফ পড়া অবস্থায় তাকে মল্লিককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাজ্জাক মল্লিক সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের কামালপ্রতাপ গ্রামের বাসিন্দা ও বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রাজ্জাক মল্লিক সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির পূর্বপাশের ঘরে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি জায়নামাজে বসে কোরআন শরিফ পড়ছিলেন। তার স্ত্রী পাশের বাড়িতে পানি আনতে যান। এ সুযোগে ঘরে ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

রাজ্জাক মল্লিকের ছেলে রফিকুল বলেন, আমাদের এখানে তিন গ্রাম নিয়ে দলাদলি আছে। আমার বাবা এলাকার মুরব্বি হওয়ায় তার কথা একপক্ষের লোকজন শুনতেন। সেই কারণে এলাকায় একটি হত্যা ঘটনায় আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় অপরপক্ষ। পরে ওই হত্যা মামলায় আমাদেরও আসামি করা হয়। তারাই আমার বাবাকে হত্যা করেছে। বাবা তখন কোরআন শরিফ পড়ছিলেন। ওই অবস্থায় জায়নামাজে তাকে খুন করা হয়। আমার ছোট ছেলে কয়েকজনকে দেখেছে এবং চিনেছে। এখন কারও নাম বলব না। মামলার এজাহারে সবার নাম উল্লেখ করব।

Narail

নিহত রাজ্জাক মল্লিকের স্ত্রী হাসনা হেনার কোলে নাতি।

রাজ্জাক মল্লিকের স্ত্রী হাসনাহেনা বলেন, আমার স্বামী নামাজ পড়ার পর প্রতিদিন কোরআন শরিফ পড়েন। সোমবার সন্ধ্যায় কোরআন শরিফ পড়াকালে তার গলা শুকিয়ে যায়। আমি তার জন্য প্রতিবেশী গিয়াসের বাড়ি থেকে পানি আনতে যাই। কিছুক্ষণ পরই আমার নাতি (৬) দৌড়ে এসে আমাকে বলে দাদাকে ওরা কুপিয়ে মারতেছে। আমি চিৎকার দিয়ে ঘরে এসে দেখি সব শেষ।

হাসনাহেনা আরও বলেন, গ্রামে দলাদলির কারণে আমার দুই ছেলে বাড়িছাড়া। গ্রামে একটা খুনের পর আমার বাড়িঘর ভেঙে ফেলেছে, ছেলেদের নামে মামলা দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। কোরআন শরিফ পড়া অবস্থায় আমার স্বামীকে কুপিয়ে মারল তারা। তারাই আমাদের প্রতিপক্ষ।

পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্জাক মল্লিকের বড় ছেলে রবিউল মল্লিক, কামালপ্রতাপ গ্রামের রশিদ মল্লিকের ছেলে নাজমুল হোসেন এবং আমদাগ্রামের অহিদার খানের ছেলে নাইচ খানকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। এখনও পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্জাক মল্লিকের বড় ছেলেসহ তিনজনকে থানায় আনা হয়েছে। এখনও মামলা হয়নি। তদন্তের আগে কিছু বলা যাবে না।

হাফিজুল নিলু/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।