হামাগুড়ি দিয়ে চলা শাহাবানু পেলেন মাথা গোঁজার ঠাঁই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৯:১৯ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০২০

‘এতকাল অনেক কষ্টে রইছি, মরণকালে একটু শান্তি পাইছি। এখন দুইডা টাহা পাইলে আরেকটু ভালো থাকমু’ এভাবেই নিজের কষ্ট দূর হওয়ার অনুভূতি জানালেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী গ্রামের বিধবা সাহাবানু।

সাহাবানুর হৃদয়বিদারক সংবাদ দেখে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নাভানা গ্রুপের একটি টিম। নাভানা গ্রুপের ওই টিম বুধবার সকালে সহায়তা নিয়ে তার বাড়ি যায়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজু ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক কামাল।

jagonews24

সাহাবানুর হৃদয়বিদারক সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় এক লাখ ২০ হাজার টাকার একটি ঘর তুলে দেন। ঘরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৫ বছর আগে সাহাবানু ও তার একমাত্র ছেলে শাহজাহানকে রেখে স্বামী ইয়াছিন মারা যান। মারা যাওয়ার সময় বসতভিটা ছাড়া কিছুই রেখে যাননি তিনি। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সাহাবানু নিজে না খেয়েও একমাত্র ছেলেকে বড় করেন। অন্যের বাড়িতে কাজের সময় হোঁচট খেয়ে কোমরে আঘাত পেয়ে আর সোজা হতে পারেননি।

jagonews24

তবে ছেলে বড় হয়ে মাকে বাড়িতে ফেলে বিয়ে করে আলাদা বাড়িতে থাকেন। মায়ের কোনো খোঁজখবর নেননি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হামাগুড়ি দিয়ে চলেন সাহাবানু। অনেক দুঃখ-কষ্টে চলে সাহাবানুর সংসার। বর্তমানে সাহাবানুর বয়স ৭০। স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ করলে বিষয়টি নজরে আসে সবার।

নাভানা গ্রুপের এজিএম আফজাল ইবনে নাজিম বলেন, মিডিয়ায় প্রকাশিত সাহাবানুর হৃদয়বিদারক সংবাদ দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। এখন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাহাবানুর সব দায়িত্ব নাভানা গ্রুপের। সাহাবানুর জন্য নগদ ২৫ হাজার টাকা স্থানীয় নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সাহাবানুর যখন যা প্রয়োজন হবে সব কিছু স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তার কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।

আতিকুর রহমান/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।