মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে জেলহাজতে পাঁচজন
সামাজিক দলাদলির কারণে এলাকার একটি আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যা দেখিয়ে আত্মহননকারী গৃহবধূর বাবাকে দিয়ে মাগুরা সদরের গোপালগ্রাম ইউনিয়ন চেয়াম্যানসহ ৮ জনের নামে মামলা করেছিলেন প্রতিপক্ষরা। কিন্তু আদালতে সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
ফলে হয়রানীর শিকার ব্যক্তিরা আইনগত প্রতিকার চেয়ে একই আদালতে মামলা করেন। আর সে মামলায় ৫ ব্যক্তিকে সোমবার জেলহাজতে পাঠিয়েছেন মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারক-২ আদালতের হাকিম হাসিবুল হোসেন লাবু।
বর্তমানে এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী রিফাত আরা টুম্পা জাগো নিউজকে জানান, মহম্মদপুর উপজেলার বিলুপাড়ার সাইফুল জর্দ্দারের মেয়ে লাবনি খাতুনের সাথে মাগুরা সদরের বাহারবাগ গ্রামের গোলাম কুদ্দুসের ছেলে আফজাল হোসেনের ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল বিয়ে হয়। গত ২৯ আগস্ট লাবনি খাতুন তার স্বামীর ওপর অভিমান করে স্বামীর বাড়িতে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। সামাজিক নেতাদের প্ররোচনায় বিষয়টিকে প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার করে লাবনি খাতুনের বাবা সাইফুল জর্দ্দার বাদী হয়ে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে গত ৩ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
সেখানে লাবনির স্বামী আফজাল হোসেন, গোপালগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান রাজিব, একই ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন সদস্য ছায়েমউদ্দিন চুন্নুসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। পিবিআই তদন্তে হত্যার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করে। এতে বিচারক ওই মামলা থেকে গোপালগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ানম্যান নাজমুল হাসান রাজিবসহ ৮ জনকে অব্যহতির আদেশ দেন।
এদিকে এ আদেশের পর উল্লেখিত মিথ্যা হত্যা মামলায় হয়রানি ও সম্মানহানীর অভিযোগে লাবনি হত্যা মামলার কথিত আসামিদের পক্ষে ছায়েম উদ্দিন চুন্নু বাদী হয়ে একই আদালতে আইনগত প্রতিকার চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করেন। যেখানে আসামি করা হয় লাবনির বাবা মহম্মদপুর উপজেলার বিলুপাড়ার সাইফুল জর্দ্দার (৪৬), সদর উপজেলার বাহারবাগ গ্রামের তাইব বিশ্বাস (৫০), ওসমান বিশ্বাস (৪৫), আকরাম বিশ্বাস (২৬) করিম বিশ্বাস (৫০) ও গোলাম আজমকে (৩৮)।
মাগুরা জজ কোর্টের পাবিলক প্রোসিকিউটর (পিপি) বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মাগুরা সদর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন এবং উল্লিখিত ৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরে আসামিদের মধ্যে সাইফুল জর্দ্দার ব্যতীত অপর ৫ আসামি সোমবার মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-২ এ হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত ওই ৫ আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরাফাত হোসেন/এফএ/জেআইএম