একজনের ‘অত্যাচার’ থেকে বাঁচতে ৪ পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ০২ মে ২০২১

ঝালকাঠির রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ আদাখোলা গ্রামে প্রতিপক্ষ এক যুবকের বিরুদ্ধে বসতঘরে হামলার অভিযোগ এনে তার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে চারটি পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

রোববার (২ মে) বেলা ১১ টার দিকে রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবে দক্ষিণ আদাখোলা গ্রামের মো. আ. মান্নান হাওলাদার, জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান ও হোসনেয়ারা বেগম এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাচেন আলী হাওলাদারের ছেলে মো. আ. মান্নান হাওলাদার লিখিত অভিযোগে বলেন, এলাকায় চুরি, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, ইভটিজিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বিস্তার পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম মিয়ার অনুমতি সাপেক্ষে এবং ইউএনও’র অবগতির মাধ্যমে ১০ জন লোক নিয়ে একটি পাহারাদার দল তৈরি করা হয়। এতে দক্ষিণ আদাখোলা গ্রামের প্রতিপক্ষ আলী হোসেনের ছেলে মো. রুবেল হাওলাদার (২২) ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৩ এপ্রিল রাত ২টার দিকে পাহারাদার মিজানুর রহমানের বাড়িতে দলবল নিয়ে হামলা চালিয়ে বসতঘর ভাঙচুর করেন। এছাড়া তারা মিজানুরের নবম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুলছাত্রী মেয়েকে তুলে নেয়ার চেষ্টাও চালান।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে গত ২৫ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পাহারা কমিটি প্রধান হিসেবে মিজানুরকে ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিতে সাহায্য করতে যাওয়ায় ২৫ এপ্রিল রুবেল তার কয়েকজন অনুসারী নিয়ে মান্নান হাওলাদারের বাড়ির পাঁচটি গাছ কেটে ফেলেন এবং তার মাদরাসা পড়ুয়া মেয়েকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল রাজাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-৯০৭) করেন মান্নান।

সংবাদ সম্মেলনে ওই গ্রামের জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, তার ঘরে বসে রুবেল ও তার সঙ্গীরা মাদক সেবন করেন। এতে বাধা দেয়ায় হামলা চালিয়ে তার ঘরে ভাঙচুর করেন তারা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ওই গ্রামের গৃহবধূ হোসনেয়ারা বেগম সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, রুবেল হোসেন তার দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে উত্যক্ত করেছেন। একইভাবে রুবেল ও তার দলবলের অত্যাচারে দক্ষিণ আদাখোলাবাসী অতিষ্ট। রুবেলের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুবেল হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে তার বাবা আলী হোসেন দাবি করেন, মান্নানের আম অন্য ছেলেরা চুরি করলেও তার ছেলে রুবেলকে দোষারোপ করা হলে স্থানীয়ভাবে তা বিচার করা হয়েছে। এছাড়া অন্য এক ব্যক্তি রুবেলের কাছে কলা বিক্রি করতে দেয়ায় একটি দোকানে রুবেল তা নিয়া বিক্রি করেছেন। এসব ঘটনা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছে। এর পরেও পূর্ববিরোধের জের ধরে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রুবেলের বিরুদ্ধে একটি জিডি করা হয়েছে এবং অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্ত করেছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে, এসব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মো. আতিকুর রহমান/এমআরআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।