কুড়িগ্রামে সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ছে জ্বরের প্রাদুর্ভাব

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০২:৫২ পিএম, ১৮ জুন ২০২১

কুড়িগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ছে জ্বরের প্রাদুর্ভাব। এতে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভীতি। করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে অনেকেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বাড়িতেই গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জানা যায়, জেলার ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত রোগী। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জ্বর, ঠান্ডা ও গলাব্যথা নিয়ে গত সাতদিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৭০ রোগী। এছাড়া জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১০০-১২০ জনের মতো রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে গত দুই সপ্তাহে উপজেলা দুটিতে করোনা শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এরমধ্যে উপসর্গ নিয়ে মারাও গেছেন কিছু মানুষ। এছাড়া করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে মানুষের অনীহা থাকায় উপজেলাগুলোতে করোনা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে পারছে না স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

জনসাধারণের মাঝে অসচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনীহা ও সীমান্তে অবাধ চলাচলকে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞগণ।

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের লিটন মিয়া (৪৫) ও চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের গেন্দা মিয়া (৩০) বলেন, ‘আমরা ৪-৫ দিন ধরে জ্বর ও সর্দিতে ভুগছি। জ্বরে কাহিল হয়ে পড়েছি। তবে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছি।’

Kurigram.jpg

পাইকেরছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার জানান, ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জ্বরে ভুগছেন। ইউনিয়নটিতে দীর্ঘদিন জ্বরে ভুগে এক ব্যক্তি মারাও গেছেন।

ফুলবাড়ীর সীমান্তঘেঁষা বালারহাট বাজারের পল্লী চিকিৎসক গোলাম মোর্শেদ জানান, বর্তমানে প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বরসহ শ্বাসকষ্টের রোগী আছে। প্রতিদিনই ফার্মেসিতে এসব রোগে আক্রান্ত অনেক মানুষ আসছেন। চাহিদার চেয়েও এসব রোগের ওষুধের বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় ফার্মেসিগুলোতে ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত জেলায় ৮ হাজার ৬৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৪১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ছয়জন ও বাকিরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জেলা প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলার সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য বিজিবিকে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন থাকায় সোনাহাট স্থলবন্দরের কার্যক্রম এখন অনেকটাই সীমিত রয়েছে। এরপরেও যে কয়েকটি মালবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম।

এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সীমান্ত এলাকাগুলোতে জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি কিছুটা উদ্বিগ্ন। তবে সিজনাল কারণে টাইফয়েডের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকে চিহ্নিত করতে রেপিটেনজিন কিটের মাধ্যমে দ্রুত পরীক্ষার জন্য প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

মাসুদ রানা/এসএমএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।