ফরিদপুরে অক্সিজেন নিয়ে ঘুরছে পুলিশ
ফরিদপুরে চলছে কঠোর লকডাউন। এর মধ্যেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। লকডাউন থাকা সত্ত্বেও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিকে পিকআপে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের একটি দল। মোবাইলে কল এলেই অক্সিজেন নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন তারা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর সদরে ১২৮ জন, বোয়ালমারীতে ২৯ জন, সদরপুরে ১৪ জন, মধুখালীতে ১৩ জন, নগরকান্দায় ১০ জন, ভাঙ্গায় ৭ জন, আলফাডাঙ্গায় ৬ জন, সালথায় ৪ জন ও চরভদ্রাসন উপজেলায় ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরও ৪ জনের।
ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. তানসিভ জুবায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করে আরও জানান, বর্তমানে ফরিদপুরের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ১৩৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া হোম আইসোলেশনে রয়েছে ৮৮৭ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৬ জন।
করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন পালনে কঠোরতার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে মানুষের পাশে থেকে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। পিকআপে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের একটি দল, সঙ্গে আছেন একজন টেকনিশিয়ান। মোবাইলে কল এলেই অক্সিজেন নিয়ে ছুটে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ এই অক্সিজেন ব্যাংক। মহামারির এই সময়ে মানুষের কাছে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা পৌঁছে দেয়ার এক ভিন্ন রকম উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ।
‘পাশে আছি আমরা, জেলা পুলিশ ফরিদপুর’ এমন শ্লোগান নিয়ে এই অক্সিজেন ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফরিদপুর পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সেবামূলক এ কাজে সহযোগিতা করছেন ফরিদপুর পুলিশ লাইনস হাসপাতালের মেডিকেল সহযোগী মো. শাহজাহান।
০১৩২০০৯৮২৯৮ নম্বরে ফোন করলেই সর্বসাধারণকে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ফরিদপুর জেলা পুলিশের ভ্রাম্যমাণ অক্সিজেন ব্যাংক বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিতে দ্রুত হাজির হচ্ছে।
লকডাউনের ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) জামাল পাশা বলেন, ‘কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। বিনা কারণে কাউকে বের হতে দিচ্ছি না। এছাড়া শহরের প্রতিটি প্রবেশ মুখে ব্যারিকেড দিয়ে ও কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।’
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘জেলায় করোনা পরিস্থিতির প্রতিনিয়ত অবনতি ঘটছে। এ অবস্থায় অক্সিজেনের চাহিদা অনেক বেড়েছে। হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি পুলিশের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ অক্সিজেন ব্যাংক চালু করা হয়েছে। আমরা হাসপাতালের পাশাপাশি রোগীদের অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাই।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো একযোগে মাঠে কাজ করছে। সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। করোনার বিস্তার রোধে ফরিদপুরসহ তিনটি পৌরসভায় লকডাউন দেয়া হয়েছে। এই বিধিনিষেধ পালন করার উপর নির্ভর করছে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি বা অবনতি হবে। লকডাউনের সময় কারও যদি কোনো সাহায্যের দরকার হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
এন কে বি নয়ন/এমএইচআর/এএসএম