দশ বছরেও আসামি খুঁজে না পেয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিকে জেলে পাঠালো পুলিশ!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ০৪:৫৯ এএম, ২৫ আগস্ট ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ে দশ বছরেও প্রকৃত আসামিকে খুঁজে না পেয়ে একই নামের নিরপরাধ এক ব্যবসায়ীকে জেলে পাঠায় পুলিশ। পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের শাস্তি দাবি করেছেন ওই নিরপরাধ ব্যক্তি।

গ্রেফতার হওয়া ব্যবসায়ী মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর জেল থেকে মুক্ত হয়ে রাতেই সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে জেল থেকে মুক্ত হওয়া ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি একজন নিরপরাধ ব্যক্তি। বিনা অপরাধে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি আমাকে জেলে পাঠিয়েছেন। ওসি আমার কাছে মোটা অংকের অর্থ চেয়েছিল, আমি দিতে অস্বীকার করায় আমাকে জেলে পাঠিয়েছে।’

নিরপরাধ স্বামীকে জেলে পাঠানোয় আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী রুপসানা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে গ্রেফতার করার পর আমি ওসির কাছে যাই। তিনি আমাকে চোরের বউ বলে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং থানা থেকে তাড়িয়ে দেন। আমি ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

তারা জানান, সোমবার দুপুরে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বাজারের মেইন রোডে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে থাকার সময় পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবারের স্বজনরা বালিয়াডাঙ্গী থানায় গিয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় তার নামে চুরির মামলা রয়েছে।

পরে পরিবারের লোকজন মামলার কাগজপত্র তুলে জানতে পারেন, ২০১১ সালে ১৬ জুন জেলার রাণীশংকৈল থানায় সাইকেল চুরির একটি মামলায় ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

কিন্তু মামলার কাগজপত্র যাচাই দেখা যায় প্রকৃত মামলার আসামি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের জিয়াখোর গ্রামের তসলীম উদ্দীন ওরফে বুধু মোহাম্মদের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক।

সে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারে সাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। সে সময় বাজারের লোকজন সাইকেলসহ তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে আদালতে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হয়ে পালিয়ে যায় ওই আসামী।

হাজিরা না দেয়ায় দশ বছর পূর্বেই ওই মামলায় তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেও পুলিশ তাকে আটক করতে না পেরে একই নামের ব্যক্তি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিষমারী গ্রামের আলিম উদ্দীন ওরফে বৈশাখুর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক নামের এই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এর বাইরে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

তানভীর হাসান তানু/এমএইচআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।