চা বেচে সংসার চলে না লোকমান শেখের, জোটেনি ভাতা
জীবনের ৮০টি বছর পেরিয়ে গেছে লোকমান শেখের। স্ত্রী নবিরন বেগমের বয়সও প্রায় ৭০। ৫২ বছরের দাম্পত্যজীবন তাদের। বয়সের ভারে দুজনের শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। তারপরও এই বয়সে থেমে নেই জীবন সংগ্রাম। দুই পেটের খোরাক জোগাতে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করছেন বৃদ্ধ লোকমান শেখ। তবে বেচা-বিক্রি একদমই না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন লোকমান-নবিরন দম্পতি।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের দক্ষিণ বাগাট গ্রামে বসবাস লোকমান শেখের। কোনো সম্পদ নেই। তিন শতকের জমিতে জরাজীর্ণ ঘর। তার কোনো ছেলেসন্তান নেই। সাত মেয়ের সবার বিয়ে হয়ে গেছে। তবে জামাইদের অবস্থা ভালো না।
আগে বাগাট বাজারে ভাড়ার ঘরে চায়ের দোকান করতেন লোকমান শেখ। সেখানে বেচাকেনা তেমন না হওয়ায় দোকান ভাড়া বাকি পড়ে যায়। এরপর ওই দোকান ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে বাজারের রেইনট্রি গাছের নিচে তাঁবু দিয়ে ঘিরে চায়ের দোকান দিয়েছেন।
লোকমান শেখ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই টং দোকানে তেমন একটা খরিদ্দার আসে না। তাই বেচাবিক্রি খুবই কম। তারপরও যা বিক্রি হয় তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলছে। ঘরে কিছু জমানো টাকা ছিল। স্ত্রীর চিকিৎসার পেছনে সে টাকাও খরচ হয়ে গেছে।’
নিজেও শারীরিকভাবে অসুস্থ লোকমান শেখ। তবে এই বয়সেও তিনি বয়স্কভাতা পান না। চা বিক্রি এবং মেয়েরা তাদের সাধ্যমতো যা দেন তা দিয়েই কোনোরকমে চলছে সংসার।
বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান খান জাগো নিউজকে বলেন, চাহিদার তুলনায় ভাতা কার্ডের সংখ্যা কম। তবে তাদের বয়স্ক ভাতার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
মধুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, তাদের এমন করুণ পরিস্থিতির বিষয়টি জানা ছিল না। কেউ আমাকে জানাননি। দ্রুত তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে।
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খোঁজ নিয়ে তাদের বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে তাদের জন্য ঘরও করে দেওয়া হবে।
এন কে বি নয়ন/এসআর/এএসএম