৫০ বছরেও একটি সেতু পায়নি ১৫ গ্রামের মানুষ
দিনাজপুরের হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের কোলঘেঁষে বয়ে গেছে তুলসিগঙ্গা নদী। এই নদীপথে ১৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের যাতায়াত। তবে দীর্ঘ ৫০ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি সেতু। বাধ্য হয়ে নিজেদের চলাচলের জন্য ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কাঠের সেতু তৈরি করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দেশ স্বাধীনের পর থেকে সংসদ সদস্য (এমপি), উপজেলা, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও সেতুর স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশমুড়ি বাজার থেকে আধাপাকা একটি সড়ক কাঠের সেতুর পশ্চিম পাশে গিয়ে ঠেকেছে। নদীতে পানি না থাকায় স্থানীয়রা এর নিচ দিয়ে যাতায়াত করছেন।
হাকিমপুর উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বদিকে তুলসিগঙ্গা কোলঘেঁষে গড়ে উঠেছে আলীহাট ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে নদীটি। পশ্চিম পাশে হাকিমপুর উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের বাঁশমুড়ি ও পূর্বপাশে ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি বাজার এবং দক্ষিণে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ব্যবহার করছেন কাঠের সেতুটি। হিলি বাজারে আসতে গেলে কয়েক মিটারের রাস্তার জন্য প্রায় আট কিলোমিটার এলাকা ঘুরে যেতে হয়। একটি সেতুর দাবি জানান তারা।

স্থানীয় আমজাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। নির্বাচন এলেই স্থানীয় নেতারা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনের পর নির্বাচন আসে, কিন্তু সেতু হয় না।’
পথচারী আহসান হাবিব বলেন, ‘দীর্ঘ পথ ঘুরে আমাদের হিলি যেতে হয়। এতে সময় নষ্ট হয়। বর্ষার সময় নড়বড়ে কাঠের সেতুটির ওপর ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি, আমাদের একটি সেতু নির্মাণ করে দিন।’

ট্রাকচালক সগির আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে প্রায় আট কিলোমিটার এলাকা ঘুরে পাশের গ্রামে যেতে হয়। একটি সেতু হলেই আমাদের কষ্ট লাঘব হবে।’
স্থানীয় আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান। সেতুর বিষয়ে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। নির্বাচনের সময় সেতুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করছি। আশা করি খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন হবে।’
হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি খুব দ্রুতই সেতুটি নির্মাণ হবে।
মো. মাহাবুর রহমান/এসআর/এমএস