প্রেমের টানে কাঁটাতার পেরিয়ে পঞ্চগড়ে ভারতীয় কিশোরী
প্রেমের টানে ভারতীয় আন্তর্জাতিক সীমানার কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলে এসেছে মোছা. খুসনামা (১৭) নামে ভারতীয় এক কিশোরী। সে ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপুকুর থানার হরিয়ানি গ্রামে ইসমাইল হোসেনের মেয়ে বলে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের মহানন্দা নদী পেরিয়ে ইদগাহ বস্তি এলাকায় প্রবেশ করে ওই কিশোরী। খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ দুপুরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় বিকেলে বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ভারতীয় ওই কিশোরী দাবি করে, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রতনদিঘী গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে আব্দুল লতিফ ওরফে রকিবের (২১) সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে তারা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। প্রেম ও বিয়ের টানেই কাঁটাতার ও আন্তর্জাতিক সীমারেখা পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সে। তবে পুলিশের কাছে সে বিয়ের কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার গভীর রাতে ভারতের ডাঙ্গীবস্তির সীমান্তের মেইন পিলার ৪৪৪ এর ২নং সাব পিলার এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ওই কিশোরী। রাতে তেঁতুলিয়ার সর্দারপাড়া এলাকার এক বাড়িতে আশ্রয় নেয় সে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় আনে। ওই কিশোরী আটকের খবর পেয়ে তার প্রেমিক আব্দুল লতিফও থানায় আসেন। সেখান থেকে প্রেমিকাকে বাসায় নিতে চেষ্টা করেন তিনি।
তবে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে ওই কিশোরী তার প্রেমিকের সঙ্গেই বাংলাদেশে প্রবেশ করে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ভারতীয় ওই তরুণী জানায়, ভারতের কেরালা প্রদেশের হাজী আলী নামে এক ব্যক্তির হোটেলে এক সময় তার ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করতেন বাংলাদেশি তরুণ আব্দুল লতিফ রকিব। দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্কের পর তারা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তারা একে অপরকে ছাড়া বাঁচবে না বলেও দাবি কিশোরীর।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া বলেন, মেয়েটির এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। তাই আমরা মেয়েটির অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়েছে। বিজিবি-বিএসএফের আলোচনা অনুযায়ী যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম ফজলে রাব্বি বলেন, এ নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিএসএফ তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আমাদের জানাতে চেয়েছে এবং পরিচয় সঠিক হলে ফেরত নিতে চেয়েছে। তবে তারা কোনো সিদ্ধান্ত না জানালে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সফিকুল আলম/এমআরআর