তানভীরের বাগানে ফুটলো বিরল প্রজাতির ‘পাখি ফুল’
সবুজ পাতার আড়ালে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে ফুলগুলো। দেখতে অনেকটা পাখির মতো হওয়ায় অনেকেই একে ডাকে ‘পাখি ফুল’ নামে। বিরল প্রজাতির এই ফুল ফুটেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের তরুণ উদ্যোক্তা তানভীর আহমেদের বাগানে। যা দেখতে ভীড় করছেন অনেক ফুলপ্রেমী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী বিভাগে লেখাপড়া শেষ করে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুরে ফুলের বাগান গড়ে তুলেছেন তানভীর আহমেদ। তার বাগানে রয়েছে দুর্লভ প্রজাতির নানা দেশি-বিদেশি ফুল।
‘পাখি ফুল’ সম্পর্কে তানভীর আহমেদ জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের পাশে তিনি প্রথম এই ফুল দেখেন। তখন থেকেই গাছটি সংগ্রহ করার ইচ্ছে জাগে তার। রমনা পার্কের দায়িত্বরত এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে একটি এবং থাইল্যান্ড থেকে আরেকটি এই ফুলের জাত সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর তার বাগানে রোপণ করেন।

নিজের বাগানে তরুণ উদ্যোক্তা তানভীর আহমেদ
তিনি বলেন, এই ফুলের কোনো গন্ধ নেই। কুঁড়ি অবস্থায় কদম ফুলের গুটির মতো আকার ধারণ করে থাকে। এরপর গুটি ফেটে রক্তজবা ফুলের মতো পৃথক ৩০ থেকে ৩৫টি কলি বেরিয়ে আসে। কিছুদিন পর কলিগুলো একসঙ্গে ফেটে পাপড়ি বেরিয়ে আসে। পাখি ফুলের গাছ খুবই ধীরে বাড়ে।
তিনি আরও জানান, ঢাকার রমনা পার্ক, শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাস, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামের বৌদ্ধ বিহারে এই গাছ রয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সাব্বির আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে পাখি ফুলকে বিলাতি অশোক বলা হয়। এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম- Brownea coccinea (ব্রাউনিয়া ককসিনিয়া)।
অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে- Scarlet Flame Bean, Mountain Rose, Rose of Venezuela, Cooper Hoop। ফুলটির মাতৃদেশ লাতিন আমেরিকা ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ (west Indian Islands)। বিদেশি হলেও ইদানীং বাংলাদেশেও দেখা যায় ফুলটি। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে গাছে গাছে পাখি ফুল ফোটে।
গাছটির ঔষধীগুণ সম্পর্কে সাব্বির আহমেদ বলেন, ট্রান্সলি (সর্দি এবং কাশি) প্রতিকারক হিসেবে ফুলের আধান খাওয়া হয়। গাছের তাজা বাকল রক্তরোধী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দেহের ক্ষতগুলিতে মলমের মতো করে প্রয়োগ করা হয়। এটি সাধারণত ডিসমেনোরিয়া এবং মেনহোরেজিয়ার মতো গাইনোকোলজিক্যাল রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/এমএস