পিপির ছেলেকে মারধরের অভিযোগে আদালতের অস্থায়ী কর্মী কারাগারে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ১২ মে ২০২২

পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী অফিস সহায়ক মজনু মিয়াকে মঙ্গলবার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ওই আদালতের বিশেষ পিপি আজিজার রহমান আজু। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পিপির ছেলে সোহরাওয়ার্দী রহমান মশালকে মারধর করেছেন।

বুধবার বিকেলের পর মজনুকে ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত অস্থায়ী কর্মী মজনু মিয়ার ছোট ভাই মোশারফ হোসেনও থানায় একটি অভিযোগ করেন। থানায় দেওয়া ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়, মজনু মিয়া আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এমনকি পিপি আজিজার রহমানেরও সহকারী হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছেন।

সম্প্রতি পঞ্চগড় আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ করা হয়। বিশেষ পিপি আজিজার রহমান অভিযুক্ত মজনুকে ওই আদালতে পিয়ন পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। প্রস্তাবে রাজি হয়ে মজনু গত ১০ মার্চ পিপির বাড়িতে গিয়ে তার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। বাকি টাকা ৫ মে দেওয়ার কথা ছিলো।

অভিযোগে বলা হয়, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন মজনু। নির্ধারিত সময়ে বাকি টাকা পরিশোধ না করায় মঙ্গলবার সকালে ওই আদালতের স্টেনোর কক্ষ থেকে মজনুকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন পিপির ছেলে মশাল। মজনু বের না হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত মজনু মিয়ার ভাই মোশারফ হোসেন বলেন, মশাল আইনজীবীও না আইনজীবীর সহকারীও না। সে তার বাবার পরিচয় দেখিয়ে আদালতে লুটপাট করে খায়। তার কথা না শুনলেই মারধর করে। আমরা তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে পারিনি বলে আমার ভাইয়ের উপর এই নির্যাতন করেছে। তারাই মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসন ও আদালতের কাছে আমরা ন্যায়বিচার চাই।

অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আজিজার রহমান আজুর দায়েরকৃত এজাহারে বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্টেনোর কক্ষে মজনুকে বসে থাকতে দেখে তার ছেলে সোহরাওয়ার্দী সেখানে বসে থাকার কারণ জানতে চান। এতে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মজনু মিয়া সোহরাওয়ার্দীকে মারধর শুরু করেন এবং গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করেন। এছাড়া মজনু মিয়া আদালতে এসে বিভিন্ন লোকজনের কাছে আইনজীবীর সহকারীর পরিচয় দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আজিজার রহমান বলেন, মজনু স্টেনোর কক্ষে আমার ছেলেকে মারধর করেছে এবং শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেছে। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই এবং তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি।

চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এ ধরনের কথা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি তার বিরুদ্ধে এজাহার করেছি। পুলিশ সেটা তদন্ত করছে।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আজিজার রহমান আজুর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে অভিযুক্ত মজনুকে থানায় আনা হয়। পরবর্তীতে দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। আটক মজনুকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সফিকুল আলম/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।