মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা

লিপসন আহমেদ লিপসন আহমেদ , সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৫২ পিএম, ২৯ মে ২০২২

বন্যার পানি নামার পর নতুন ভোগান্তিতে পড়েছেন সুনামগঞ্জের নদীপাড়ের বাসিন্দারা। শুরু হয়েছে নদীভাঙন। জেলার গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি জনবসতিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর পাড় ভেঙে বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

সুনামগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর পাড় উপচে গত ১৭ মে থেকে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা প্লাবিত হয়। এক সপ্তাহ আগে থেকেই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমতেই ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়িঘর, দোকানপাট, জনবসতি গ্রাস করছে নদী।

সুনামগঞ্জ জেলা শহরের লঞ্চঘাট, জেলরোড ও শহরতলির ইব্রাহিমপুর, সদরগড়, অচিন্তপুর, ধারারগাঁও ব্রাহ্মণগাঁও নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর, আমবাড়ি এলাকায় ভয়াবহ নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা

জগন্নাথপুর উপজেলার ফেচীর বাজার, রানিগঞ্জ বাজার ও বাঘময়না গ্রাম; শাল্লা উপজেলার ফয়জুল্লাপুর ও প্রতাপপুর এবং দিরাই উপজেলার আখিলশাহ বাজার গ্রাস করছে সুরমা নদী।

সুনামগঞ্জ শহরতলির সদরগড় গ্রামের ফুলেছা বেগম (৭০) জাগো নিউজকে বলেন, ‘নদীর ভাঙনে আমরা নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি। রাত হলে আতংকে বাড়ি থাকতে পারি না। এই বুঝি ঘর ভেঙে পানিতে চলে যাবে।’

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা

একই গ্রামের বারিক মিশা জাগো নিউজকে বলেন, ‘নদীর ভাঙনে আমার অনেক জায়গা পানির নিচে চলে গেছে। এখনও মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু টিকে আছে। এটা চলে গেলে ছেলেমেয়ে নিয়ে পথে পথে ঘুরতে হবে।’

দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা রেহানা বেগম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বন্যার পাইন্নেতো (পানি) হকলতা (সবতা) নেয় না, কিন্তু নদীয়ে ধরলে রাইক্কা যায় না কোনতা। আমরা বাবা অখন নদীভাঙনো পড়ছি। বাইচ্চা-কাইচ্চা নাতি-নাতল লইয়া কোনান যাইতাম (কোথায় যাবো)?’

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা

নদীভাঙনে নিজের দোকান হারিয়েছেন দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা মানিক মিয়া। এখন অন্যের দোকানে কর্মচারীর কাজ করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সর্বনাশা নদীভাঙন আমাকে পথে বসিয়েছে। এ থেকে আমরা মুক্তি চাই।’

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইরফানুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে আমাদের নজরদারি রয়েছে। কোথাও ব্যাপকভাবে ভাঙন শুরু হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।