কৃষকের বিপদে আশা জাগাচ্ছে কম্বাইন হারভেস্টার

ইমরান হাসান রাব্বী ইমরান হাসান রাব্বী , শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:৪৭ পিএম, ০৭ জুন ২০২২

শেরপুরে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হলেও শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরি কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানের শঙ্কা কৃষকদের। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে আধুনিক কৃষিযন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার।

চলতি মৌসুমে শেরপুর জেলায় ৯১ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। সোমবার (৬ জনু) পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।

এবার জেলার ৭টি ইউনিয়েনের ওপর দিয়ে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। এজন্য দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত তারা। এ সুযোগে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দাম নিচ্ছেন শ্রমিকরা। দৈনিক এক হাজার থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের।

Harvestor-(3).jpg

কৃষকরা বলছেন, মাঠভর্তি সোনালি ফসল থাকলেও দুশ্চিন্তা হচ্ছে। প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগের দোহাই দিয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে শ্রমিকের মজুরি। এবার তা আকাশছোঁয়া। এক একর জমির ধান কাটতেই শ্রমিক মজুরি জনপ্রতি ১ হাজার ৫শ থেকে ১ হাজার ৭শ টাকা। যে কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ।

তবে শ্রমিকরা বলছেন, বছরের প্রথম ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধানের। এসব ধান কেটে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতেই বেশ পরিশ্রম হচ্ছে, এজন্য হাঁকা হচ্ছে বেশি দাম। আবার জেলায় শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে এমন সংকটের সময় আশার আলো দেখিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষির যান্ত্রিকীকরণের ফলে বিভিন্ন কোম্পানির কম্বাইন হারভেস্টারের ব্যাপক চাহিদা ও প্রচলন শুরু হয়েছে শেরপুরে। জেলাজুড়ে ৬৪টি কম্বাইন হারভেস্টার কাজ করছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ৫০ শতাংশ সরকারি ভর্তুকিতে সহজ কিস্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হারভেস্টার কিনে লাভের মুখ দেখেছেন ক্রেতারাও।

Harvestor-(3).jpg

এ মেশিন দিয়ে মাত্র এক ঘণ্টায় এক একর জমির ধান কেটে মাড়াই, ছাঁটাই ও বস্তাভর্তি করা যায়। খরচ মাত্র সাত হাজার টাকা। যেখানে এ কাজের জন্য পাঁচজন শ্রমিকের পাঁচদিন সময় লাগতো। মজুরি দিতে হতো ২৩ হাজার টাকা। স্বল্প খরচে সময় বাঁচাতে তাই সবাই ঝুঁকছে কম্বাইন হারভেস্টারে।

নালিতাবাড়ি উপজেলার রমিজ মিয়া বলেন, শ্রমিকের দাম অনেক। তাই হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটালাম। রোদ থাকায় এক একর জমির ধান কাটতে সময় লেগেছে মাত্র এক ঘণ্টা। ধান কাটার পর মাড়াই, ছাঁটাই ও বস্তাভর্তি করাসহ খরচ পড়লো মাত্র সাত হাজার টাকা। তাই শ্রমিকের ওপর ভরসা না করে হারভেস্টারে ঝুঁকছে কৃষকরা।

কৃষি বিভাগের হিসাব মতে জেলায় এ পর্যন্ত ৮০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাকি ধান কাটতে আরও ১৫ দিনের বেশি সময় লাগবে।

শেরপুর কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোহিত কুমার বলেন, জেলায় ৬৪টি হারভেস্টিং মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা হচ্ছে। দ্রুত ধান কাটতে আরও কয়েকটি মেশিন যুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের শ্রমিকরা আসতে শুরু করেছেন। কাজেই শ্রমিক সংকট কমে যাবে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।