ছুরিকাঘাতে হত্যা

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বুলবুলের মা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী
প্রকাশিত: ০৮:১০ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২২
বাড়িতে চলছে শোকের মাতম ও ইনসেটে নিহত বুলবুল

দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ছাত্র বুলবুল আহমেদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বুলবুলের মা। তাকে সান্ত্বনা দিতে বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন স্বজন, এলাকাবাসী ও বন্ধুরা। একই সঙ্গে বুলবুল হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে সবোর্চ্চ শাস্তির দাবি জানান তারা।

নিহত বুলবুল আহমেদ নরসিংদী শহরের ভেলানগর এলাকার মৃত উহাব মিয়ার ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। ২০১৮ সালে নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরে বুলবুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে গাজীকালুটিলা লাগোয়া ‘নিউজিল্যান্ড’ এলাকায় ছুরিকাঘাত করা হয় বুলবুলকে। সহপাঠীরা উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বুলবুলের মা

সন্ধ্যায় বুলবুল নিহতের খবর বাড়িতে এলে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের কান্না ও আহাজারিতে আকাশ ভারি হয়ে ওঠে। আদরের ছেলেকে হারিয়ে মা ইয়াসমিন বেগম বারবার বিলাপ করছিলেন। কোনোভাবেই তাকে সান্ত্বনা দিতে পারছিল না পরিবারের সদস্যরা। রাতেই বুলবুলের বড় ভাই জাকারিয়া এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাতে নিহতের মরদেহ নরসিংদীর বাড়িতে আসার কথা জানিয়েছেন স্বজনরা।

নিহতের মা ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘আমার জীবনের একমাত্র সম্বল এ ছেলে। ছেলেটাকে মেরে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। আমার কষ্ট দেখে বুলবুল প্রায়ই বলতো, মা আর এক বছর ধৈর্য ধরো। আমার পড়ালেখা শেষে হয়ে গেলেই তোমার সব কষ্টের অবসান হয়ে যাবে। আমি চাকরি করে সংসার চালাবো। কিন্তু তা আরা হলো না। আমার সুখ ও শেষ সম্বল ছেলেটাকে মেরে ফেললো। আমি তাদের বিচার চাই।’

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বুলবুলের মা

নিহতের বোন সোহাগী বলেন, ‘বুলবুল পরীক্ষা শেষে তার এক বান্ধবীর সঙ্গে টিলা পাহার এলাকায় ঘুরতে যান। ওইখানেই কিছু একটা হয়েছে। ঘটনা যাই হোক আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’

বুলবুলের সহপাঠী হৃদয় বলেন, ‘সে খুবই মেধাবী ছিল। পড়ালেখা শেষ করে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে ছিল তার। মাত্র এক বছর আগে তার বাবা মারা গেলো। এখন তার মৃত্যুতে পরিবার কীভাবে শোক সামলাবে? আমরা অবিলম্বে বন্ধুর হত্যার বিচার চাই।’

শাবিপ্রবির নরসিংদী জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভেতরে সহপাঠীর এমন নির্মম মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমরা এখন ক্যাম্পাসে অবস্থান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বুলবুল হত্যার বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানাচ্ছি।

সঞ্জিত সাহা/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।