সহকারী পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ নারীর
মানিকগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিয়ের দাবিতে ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় গেলে মারপিটও করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তা বিয়ে না করলে থানার সামনে আত্মাহুতি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ওই নারী।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মানিকগঞ্জের সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হক।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বিকালে ভুক্তভোগী ওই নারী (৪০) সাংবাদিকদের জানান, ৯ মাস আগে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। হোয়াটসঅ্যাপে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রলোভনে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন পুলিশ কর্মকর্তা। একাধিকবার তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে।
রোববার (৩১ জুলাই) মধ্যরাতে ওই নারী সহকারী পুলিশ সুপারকে ফোন করলে তার স্ত্রী ফোন ধরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। পরদিন সোমবার (১ আগস্ট) সকালে বিয়ের দাবিতে সহকারী পুলিশ সুপারের বাসায় যান তিনি। এ সময় মহিলা পুলিশ ডেকে তাকে মারপিট করা হয় বলে অভিযোগ ওই নারীর।
এরপর থানায় প্রায় ৯ ঘণ্টা তাকে বসিয়ে রেখে মায়ের সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি খোয়া যায়। যেখানে দুজনের সম্পর্কের বিভিন্ন ডকুমেন্ট ছিলো বলে দাবি করেছেন ওই নারী।
তিনি আরও বলেন, সোমবার রাতে পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ওই নারীর বাড়িতে যান। তারা পুলিশ কর্মকর্তার চাকরি রক্ষার কথা বলে ওই নারীর কাছ থেকে অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে লিখিত আনেন। একইসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা আগামী ৮ আগস্ট ওই নারীকে বিয়ে করবেন বলে সাদা কাগজে একটি লিখিত দিয়ে আসেন তারা।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সিংগাইর থানায় যান মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্ল্যা বাসায় থাকলেও সাংবাদিকদের ডাকাডাকিতে তিনি বের হননি।

ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার পর থেকে তিনিসহ তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি বলেন, যদি পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বিয়ে না করে তাহলে থানার সামনে শরীরে আগুন জ্বালিয়ে আত্মাহুতি দেবেন।
এদিকে সিংগাইর সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত সরকারি ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী নারী মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে ঘটনা জানান।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মেহাম্মদ গোলাম আজাদ খান জানান, ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকালের ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শুনেছি কিছুটা অসুস্থ।
রাতে ভুক্তভোগী নারী জানিয়েছেন, বুধবার (৩ আগস্ট) তিনি পুলিশ কর্মকর্তা রোজাউল হকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করবেন।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/জেআইএম