চুয়াডাঙ্গায় ছুটি না নিয়েই লাপাত্তা প্রাথমিকের তিন শিক্ষক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২২
প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা ও সহকারী শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক ও দুজন সহকারী শিক্ষক ছুটি না নিয়েই মাসের পর মাস অনুপস্থিত রয়েছেন। শিক্ষা অফিস থেকে চিঠি পাঠানো হলেও তার জবাব তারা দেননি। এই তিন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় ওই দুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১ জুলাই হাজরাহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন নিগার সুলতানা। ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের জন্য চিকিৎসাজনিত ছুটি নেন তিনি। ছুটি নিয়েই তিনি আমেরিকা চলে যান। বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে নিয়মানুযায়ী মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি।

২০১৯ সালের ১১ মার্চ তিনি আরও দুই মাসের জন্য চিকিৎসাজনিত ছুটির একটি দরখাস্ত ডাকযোগে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠান। পরবর্তীতে তিনি দেশে ফিরে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে যোগ দেন। এরপর চলতি বছরের ২৮ মার্চ তিনি আবারও আমেরিকা চলে যান। এখনও তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুণ্ডু গত ১৫ জুন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার ছুটি না নিয়েই আড়াই বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি বিদ্যালয়ে আসেন না।

হাজরাহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম শামিউল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন। আর সহকারী শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার ঢাকায় বসবাস করছেন।

অপরদিকে ভিমরুল্লা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিপা শাহরিয়ার চিকিৎসাজনিত কারণ দেখিয়ে ছয় মাসের ছুটি নিলেও ৯ মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসেন না। তিনি কোথায় আছেন সে ব্যাপারে কোনো তথ্য বিদ্যালয়ের কাছে নেই। তিনি সহকারী শিক্ষক নীনা শাহরিয়ারের বোন।

ভিমরুল্লা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে ছালমা বলেন, নিপা শাহরিয়ার ২০১২ সালের ২৭ আগস্ট সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাজনিত ছুটি নেন। এরপর ১১ নভেম্বর আবারও ছয় মাসের ছুটি নেন। গত মে মাসে সেই ছুটিও শেষ হয়েছে। অথচ অদ্যাবধি কর্মস্থলে তিনি আসেননি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুণ্ডু বলেন, নীনা শাহরিয়ারের কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে ২০২০ সালের ১৪ জুলাই কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার জবাব পাওয়া যায়নি। নিগার সুলতানার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে আর নিপা শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূইয়া জানান, ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। সেই পত্র জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সালাউদ্দীন কাজল/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।