‘জীবিত’ প্রমাণ করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন পেংকু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জামালপুর
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২২
ফজলুল হক পেংকু

বেঁচে থেকেও নিজেকে ‘জীবিত’ প্রমাণ করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মো. ফজলুল হক ওরফে পেংকু (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় দিনমজুর। সম্প্রতি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে পড়েন বিপত্তিতে। তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দেওয়ায় কাগজে-কলমে তাকে মৃত দেখাচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন তিনি।

ফজলুল হক পেংকু জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতের চর শাহপাড়া গ্রামের মৃত নজু মিয়ার ছেলে। তিনি ১৯৭৭ সালে ২ ফেব্রুয়ারি এ গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন।

পেংকু জানান, সরকারের দেওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের কার্ডের আবেদন করতে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন তিনি নাকি কাগজে-কলমে মারা গেছেন। তার নাকি আবেদন করার সুযোগ নেই। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব ফিরোজ ভোটার তালিকায় তাকে মৃত দেখানোর বিষয়ে জানান। পরে ওইদিনই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর তিনি আবেদন করেন। তবে এখনো তিনি এর কোনো সমাধান না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

হতাশা প্রকাশ করে পেংকু বলেন, আমি মারা গেলাম কবে! অফিসের ভুলের মাশুল আমাকে দিতে হচ্ছে। এখন আমি অফিস-আদালতের কোনো কাজই ঠিকমতো করতে পারছি না। বেঁচে থেকেও নিজেকে ‘জীবিত’ প্রমাণ করতে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এছাড়া এলাকাবাসীও আমাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত হাসি-তামাশা করছে।

জানতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব সৈয়দ ফিরোজুল আলম ফিরোজ বলেন, ভোটার হালনাগাদ করার সময় ভুলক্রমে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। তিনি এরই মধ্যে আবেদন করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান তার জীবিত থাকার প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেটা সংশোধন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।

গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান আনসারী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি উপজেলা মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করেছি। সেখানে উপজেলা নির্বাচন অফিসারসহ সবাই উপস্থিত ছিলেন। তারা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মোক্তার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, জীবিত ফজলুল হক পেংকুকে ভোটার তালিকায় ভুলক্রমে মৃত দেখানো হয়েছে। বিষয়টি সংশোধনে এরই মধ্যে আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত এটি সংশোধন করা হবে।

জামালপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, এরকম ঘটনা মাঝে মধ্যেই শোনা যাচ্ছে। তবে এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করলে তার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

মো. নাসিম উদ্দিন/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।