ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

শয্যা বেড়েছে, বাড়েনি স্বাস্থ্যসেবা

রাজীবুল হাসান রাজীবুল হাসান ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২২

হাসপাতালের শয্যা বাড়লেও উন্নতি হয়নি চিকিৎসা ব্যবস্থার। জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও চিকিৎসাকর্মীর অভাবে ভৈরব উপজেলা ১০০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ১৯৬৮ সালে চালু হয় ১০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এরপর দুই দফা শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তী সময়ে পৌর শহরসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের রোগীদের সেবা দিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন করেন।

পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০ শয্যায় উন্নীত হাসপাতালের চারটি নতুন আধুনিক প্রযুক্তির ভবন নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। হাসপাতালটিতে শয্যা বাড়ানো ও ভবন নির্মাণ করা হলেও জনবল নিয়োগ করা হয়নি। ফলে উপজেলার এক লাখ ১৮ হাজার ৯৯২ জনবসতির স্বাস্থ্যসেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

পৌর শহরসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন ৮০০-৯০০ রোগী বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন এই হাসপাতালে। জনবল সংকটে সেবা দিতে চিকিৎসকদের বেগ পোহাতে হচ্ছে। কাগজে-কলমে ২৬ জন চিকিৎসক নিযুক্ত রয়েছেন। তবে সরেজমিনে দেখা গেছে হাসপাতালে আসা রোগীদের তুলনায় চিকিৎসক কম। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন। এত রোগী দেখতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগী তাসলিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘লোকমুখে শুনেছি উপজেলার হাসপাতাল আগের চেয়ে অনেক বড় করেছে। সেজন্যই হাসপাতালে এলাম। কিন্তু এসে দেখি আগের মতোই সেবা দেওয়া হচ্ছে। তেমন কোনো আধুনিক সেবা চালু হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকালে এসেছি ডাক্তার দেখাইতে। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটেছি। ডাক্তাররা শুধু সামান্য ওষুধ দিয়ে বিদায় করেছে।’

চিকিৎসা নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জাগো নিউজকে বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে ও আলট্রাসনো মেশিন উন্নতমানের না হওয়ায় আমাদের বাইরের বিভিন্ন ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে হয়। এতে অনেক বেশি টাকা লাগে।’

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমেন মিয়া বলেন, আট মাস আগে শয্যা বাড়ানো এবং ভবন নির্মাণ করা হলেও নতুন করে এখনো ১০০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু করা হয়নি। বাড়তি জনবলও নিয়োগ করা হয়নি। সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা।

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন ১০০ শয্যা উন্নীত হলেও এখনো প্রশাসনিক অনুমোদন হয়নি। তাই আমাদের ৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্টাফ দিয়ে রোগীদের দিতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।

এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।