সোনাহাট বন্দরে চালু হয়নি ইমিগ্রেশন, বাধাগ্রস্ত আমদানি-রপ্তানি
রাজস্ব আয়ের বিপুল সম্ভাবনাময় একটি বন্দর হলো উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর। তবে বন্দরটির অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও ইমিগ্রেশন চালু না থাকায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসার হচ্ছে না। এর ফলে বন্দরের তিন হাজার শ্রমিকের উপার্জনের উৎস যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি ব্যাহত হয়ে হচ্ছে বন্দরকেন্দ্রিক দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) ব্যবসায়িক সম্পর্কও।
তাই রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও বন্দরের সক্রিয়তা আরও বেগবান করতে ইমিগ্রেশন চালুর বিষয়টি জরুরি বলে মনে করছেন বন্দরের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সোনাহাট স্থলবন্দরটি চালু হয়। ভারতের আসাম, মেঘালয়সহ সেভেন সিস্টারখ্যাত রাজ্যগুলোর সঙ্গে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে বন্দরটি। নির্ধারিত তালিকা অনুসারে ভারত থেকে ১০টি পণ্য আমদানি ও বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়া সব পণ্য রপ্তানির জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বন্দরের অবকাঠামো। তবে বন্দর চালুর দীর্ঘ সময় পার হলেও ইমিগ্রেশন না থাকায় কেবল কয়লা ও পাথর আমদানি এবং হাতেগোনা দুই-তিনটি পণ্য রপ্তানি ছাড়া কোনো কাজে আসছে না বন্দরটি।

এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ইমিগ্রেশন চালু না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসায়িক সম্পর্কও। যোগাযোগের ক্ষেত্রে হতে হচ্ছে হয়রানির শিকার। মাঝেমধ্যেই আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বন্দরের প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। অথচ এই বন্দরটি থেকে প্রতি বছর আয় হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি টাকা। যদি দ্রুত ইমিগ্রেশন চালু হয় তাহলে আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরের ব্যবসায়ী সাকিল বলেন, শুধু ইমিগ্রেশন না থাকায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করতে হয়। এতে অনেক সময় ব্যবসায়িক জরুরি আলাপ করা সম্ভব হয় না।

সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হলে ভারতের সেভেন সিস্টারখ্যাত রাজ্যগুলোসহ ভুটানের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের সুবিধা হবে।
বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সরকার রাকীব আহমেদ জুয়েল বলেন, ইমিগ্রেশন চালু হলে দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক উন্নত হবে। ব্যবসার পরিধি বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে সরকারি রাজস্বও।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, সোনাহাট স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চালুর বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে যা প্রয়োজন তা দ্রুত করা হবে। আশা করছি, দ্রুত ইমিগ্রেশন চালু হবে।
এমআরআর/এমএস