পঞ্চগড় জেলা পরিষদ নির্বাচন

ছোট ভাইয়ের কৃতকর্মে নৌকার প্রার্থীর পরাজয়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৭:২২ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২২

পঞ্চগড় জেলা পরিষদ নির্বাচনে ছোট ভাইয়ের কৃতকর্মের জন্যই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

রোববার (২৩ অক্টোবর) পঞ্চগড় প্রেস ক্লাব সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের (সদ্য বিলুপ্ত কমিটি) সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব।

তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার ও তার ছোটভাই আবু বকর ছিদ্দিকের একলা চল নীতির কারণেই নৌকার প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমানের পরাজয় হয়েছে। নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সহ-সভাপতি ও পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাটসহ সব নেতাকর্মীরা আন্তরিক ছিলেন বলেই মাত্র ৫২ ভোটের ব্যবধানে তিনি হেরেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমানের ছোট ভাই আবু বকর সিদ্দিক এর আগে জেলা পরিষদের প্রশাসক ছিলেন। ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হেরে গিয়ে ভোটের পর মামলা ও পেশি শক্তির ভয় দেখিয়ে ভোটারদের দেওয়া টাকা ফেরত নিয়েছিলেন। সেটি এবারের নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এছাড়াও প্রার্থীর ভাই আবু বকর সিদ্দিক জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপির প্যানেলের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে অংশ নেন। এমন কী নির্বাচনী পোস্টারে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানও লেখেননি। নির্বাচনের হেরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন তারা।

jagonews24

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, আমরা আওয়ামী মনোনীত প্রার্থীর জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভোট চাইতে গেলে তারা আমাদের উল্টো প্রশ্ন করেছিলেন- গেল ইউনিয়ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে কত টাকা করে নিয়েছেন সেটা একবার প্রার্থীকে জিজ্ঞেস কইরেন।

সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের প্রার্থী তার ভাই আবু বকর সিদ্দিকের জন্যই হেরেছেন। তার ভাই সব সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কটাক্ষ করে কথা বলেন। কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আমাদের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বৈত ভূমিকার অভিযোগ তুলেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সারোয়ার বকুল বলেন, আবু বকর সিদ্দিক উদ্দেশ্যমূলক ভাবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীকে হেয় করে কথা বলেছেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, আমাদের প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমান। বড় ভাইয়ের নির্বাচনে ছোট ভাই কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। তার রহস্যজনক ভূমিকার কারণেই আওয়ামী মনোনীত প্রার্থীর পরাজয় হয়।

এর আগে ১৭ অক্টোবর পঞ্চগড় জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমানকে ৫২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আব্দুল হান্নান শেখ। তিনি চশমা প্রতীকে ২৮৩ ভোট পান। এ ঘটনায় শুক্রবার আওয়ামী মনোনীত প্রার্থীর ছোটভাই আবু বকর সিদ্দিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের কারণে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর জয় হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

সফিকুল আলম/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।