আঙুলের ছাপে মিললো পদ্মার চরে পাওয়া মরদেহের পরিচয়
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পদ্মা নদীর চর থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধার করে মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ। পরে এক নারী মরদেহটি তার স্বামীর বলে দাবি করেন। তখন সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট মৃত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করলে পরিচয় শনাক্ত হয়।
বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে ওই মরদেহের আঙুলের ছাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর আগে
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার পালেরচর এলাকার পদ্মা নদীর চর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নৌ-পুলিশ, সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের সময় নিখোঁজ হন জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবার আলমখাঁরকান্দি গ্রামের জেলে মজিবর ফকির। মঙ্গলবার রাতে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর জাহানারা বেগম নামে এক নারী সেটি তার স্বামীর দেহ বলে দাবি করেন। পরবর্তীতে নৌ-পুলিশ মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তর জন্য সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর দেয়। বুধবার দুপুরে তারা এসে ডিভাইস সেন্সরের মাধ্যমে মরদেহের দুই হাতের চার আঙুলের ছাপ নেয়। পরে এনআইডি সার্ভারের সহযোগিতায় মৃত ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়।
এসময় জানা যায়, মরদেহ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. হানিফ (৩২)। তিনি কিশোরগঞ্জে কটিয়াদী থানার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুমুরদিয়া গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে।
পদ্মায় নিখোঁজ মজিবরের স্ত্রী জাহানারা বেগম জানান, গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে অভিযানের সময় ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে জাজিরা পূর্বনাওডোবার আলমখাঁরকান্দি এলাকায় পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন মজিবর। মঙ্গলবার রাতে নৌ-পুলিশ একটি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। তাই তিনি ভেবেছিলেন মরদেহটি তার স্বামীর।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিখোঁজ হওয়া মজিবরের বিষয়ে আমরা শুনেছি। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, সিআইডি ফরিদপুরের উপ-পরিদর্শক মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মৃত ব্যক্তির দুই হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে পরীক্ষা করে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর বের করতে সক্ষম হয়েছি। মৃত ব্যক্তির বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
জাজিরা মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনে পদ্মা নদীর চর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করি। কিন্তু স্থানীয় জাহানারা বেগম নামে এক নারী দাবি করেন, সেটি তার স্বামীর মরদেহ। তাই আমরা সিআইডি ক্রাইম সিন ফরিদপুর ইউনিটকে জানালে তারা আঙুলের ছাপ নিয়ে মৃতের পরিচয় শনাক্ত করে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এরইমধ্যে হানিফের পরিবারকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিকেলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে সিআইডি তার মৃত্যুর বিস্তারিত বিষয় জানার পর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
মো. ছগির হোসেন/এমআরআর/জিকেএস