বেলুন ফাটানোয় শ্বাসরোধে শিশু হত্যা, মুদি দোকানি গ্রেফতার

নওগাঁর আত্রাইয়ে ছয় বছরের শিশু ইব্রাহিমকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় বুলবুল সোনার (৩১) নামে এক মুদি দোকানদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার বুলবুল সোনার উপজেলার বিশা ইউনিয়নের শ্রীধরগুড়নই গ্রামের আব্দুল জলিল সোনারের ছেলে। নিহত শিশু ইব্রাহিম একই গ্রামের হযরত আলীর ছেলে ও শ্রীধরগুড়নই দাখিল মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

২৭ নভেম্বর বিকেলে উপজেলা থেকে বুলবুল সোনারকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় নওগাঁ পুলিশ সুপার হলরুমে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, ১০ নভেম্বর শিশু ইব্রাহিম নিখোঁজ হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। জিডির পর পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। এক পর্যায়ে শিশু ইব্রাহিমের বাবার শোবার ঘরে জানালার পাশে একটি চিঠি পাওয়া যায়। চিঠিতে বলা হয়- একটি সিম এবং একটি মোবাইল কিনে বাবুর দোকানের সামনে চুলার মধ্যে রেখে যেতে। একই সঙ্গে আরও ছয় লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়। এরপর ২৬ নভেম্বর শিশুর বাবাকে একটি অজ্ঞাত মুঠোফোন থেকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, স্থানীয় সোর্স ও প্রযুক্তির সহায়তায় বুলবুল সোনারকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর বুলবুল জানায় সে একজন মুদি দোকানদার এবং স্থানীয় শ্রীধরগুড়নই দাখিল মাদরাসার খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন। তার বিভিন্ন জায়গায় ঋণ ছিল। সেসব টাকার জন্য ঋণদাতারা তাকে বারবার চাপ দিচ্ছিল। এই ঋণ থেকে মুক্তি হওয়ার জন্যই সে শিশুর বাবার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু পুলিশের কাছে কথাটি বিশ্বাস না হলে তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

জিজ্ঞাসাবাদে বুলবুল আরও জানায়, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে তার দোকানে গিয়ে শিশু ইব্রাহিম পাঁচ-ছয়টি বেলুন ফাটায়। শিশুটিকে দোকান থেকে চলে যেতে বলা হলেও চলে না গিয়ে আরও বেলুন ফাটাতে চায়। তাই রাগ করে শিশুটিকে গলা টিপে হত্যা করে চা স্টলের পিছনে ছাইয়ের স্তূপের মধ্যে বস্তাবন্দী করে পুতে রাখে। ১৮ নভেম্বর বালতিতে করে শিশুটির অর্ধগলিত মরদেহ পাশে আত্রাই নদীতে পুঁতে রেখে একটি বড় কংক্রিটের বস্তা দিয়ে চাপা দিয়ে রাখে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে শিশুটির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ আসামিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর জন্য আদালতে পাঠাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, সদর সার্কেল রাকিবুল হাসান ইবনে রহমান, আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকারসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আব্বাস আলী/জেএস/জিকেএস