নরসিংদীর কলাবাগান থেকে উদ্ধার দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী
প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২
দ্বীন ইসলাম (বামে) ও আলী হোসেন

নরসিংদীর রায়পুরায় কলাবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) নিহতের স্বজনরা থানায় গিয়ে তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন।

জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা। দুজনের স্ত্রীই বলছেন, তাদের স্বামী নিয়মিত জুয়া খেলতেন। খেলাকে কেন্দ্র করেই তাদের হত্যা করা হয়েছে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনো থানায় মামলা হয়নি।

গতকাল সোমবার দুপুরে রায়পুরা আদিয়াবাদ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের কলাবাগান থেকে ওই দুজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের পাহাড়ফুলদী গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে দ্বীন ইসলাম (৩৪) এবং রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে আলী হোসেন (৪২)। দুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর তাদের মরদেহ কলাবাগানে ফেলে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় এক কৃষক ওই বাগানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দুই ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় তার চিৎকারে পাশে থাকা কৃষকেরা সেখানে ছুটে আসেন। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে দুপুরে রায়পুরা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত দ্বীন ইসলামের স্ত্রী শাহিদা বেগম বলেন, আমার স্বামী বেকার ছিল। তাই তিনি নিয়মিত জুয়া খেলতেন। রোববার বিকেলে তার ফোনে একটি কল আসলে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ওই রাতে আর বাড়িতে ফেরেননি। অনেকবার কল দিয়ে ফোন বন্ধ পাচ্ছিলাম। সোমবার দিনভর তার কোনো খোঁজ না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে কলাবাগান থেকে দুজনের মরদেহ পাওয়া গেছে শুনে রায়পুরা থানায় যাই। সেখানে গিয়ে পরনের কাপড় ও ছবি দেখে মরদেহ শনাক্ত করি।

শাহিদা আরও বলেন, আমি নিশ্চিত, জুয়া খেলার কথা বলে ডেকে নিয়ে তা সঙ্গের লোকজনই কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহত আলী হোসেনের স্ত্রী রেনু বেগম বলেন, আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করতেন। দুই সংসারে তার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে আছে। সুযোগ পেলেই তিনি জুয়া খেলতেন। রোববার বিকেলে তার ফোনে কল করে কেউ একজন ডেকে নেয়। ওই কল পেয়ে তিনি তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে যান। রাতে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করা হয়। পরে গতকাল রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবি দেখে থানায় গিয়ে স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করি।

রেনু আরও বলেন, জুয়া খেলা নিয়ে কারও সঙ্গে তার হয়তো দ্বন্দ্ব চলছিল। দ্বন্দ্বের জেরে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, নিহত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় মামলা করেনি।

সঞ্জিত সাহা/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।