সবজির বাজারে স্বস্তি, দাম বাড়েনি ডিম-মাংসের

দেশের অন্যান্য জায়গার মতো নারায়ণগঞ্জেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। আর শীতের মৌসুম শুরু হলেই কমতে থাকে শাকসবজির দাম। বেশিরভাগ শাকসবজির দাম কমার কারণে স্বস্তিতে আছেন ক্রেতারা। আগামী কয়েকদিন শাকসবজির দাম এমনই থাকবে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।
সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোডের হাজী আহসান উল্লাহ বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
মুরগীর বাজারে ঘুরে দেখা যায়, নানা জাতের মুরগীতে কেজি প্রতি ৫-১০ টাকা হারে কমেছে আবার বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী ১৫৫ টাকা, কক মুরগী ২৬০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগী ২৫০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মুরগী ২৪০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মোরগ ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী ১৫৫-১৬০ টাকা, কক মুরগী ২৫০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগী ২৪০-২৫০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মুরগী ২৪০-২৫০, প্যারেন্ট খাসি মোরগ ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
এছাড়া বিভিন্ন জাতের প্রতি পিস হাঁস ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির দাম। বর্তমানে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০-৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯৫০-১০৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি হালি ডিম ৩৬ টাকা দরে এবং ১০০ পিস ডিম ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও প্রতি হালি ডিম ৩৬ টাকা দরেই বিক্রি হয়েছিল।
শাকসবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ২০-২২ টাকা, লতি ৩০ টাকা, ধনেপাতা ৩০ টাকা, দেশি ধনেপাতা ৫০ টাকা, শিম ২৫-৩৫ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ২০-২৫ টাকা, পটল ৩৫-৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা, দেশি নতুন পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, চায়না আদা ১৩০ টাকা, দেশি আদা ৮০-৯০ টাকা, রসুন ১১০-১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, গুড়া মরিচ ৫০০ টাকা, দেশি গুড়া মরিচ ৪০০ টাকা, গাঁজর ৩০ টাকা, মটরশুঁটি ১০০ টাকা, খিরাই ২০-৩০ টাকা, শশা ৩০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পুইশাকের বিচি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে প্রতি পিস মিষ্টি কুমড়া ৩০-৬০ টাকা, লাউ ২০-৩০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা এবং প্রতি হালি এলাচি লেবু ও গোল লেবু ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি আঁটি লালশাক ১০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, বোত্তা শাক ৪০ টাকা, ডাটা শাক ৩০ টাকা, পুই শাক ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুটকির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি লইটা শুটকি ৬০০ টাকা, কাঁচকি শুটকি ৪৫০ টাকা, চিংড়ি শুটকি ২৫০-৪০০ টাকা, চান্দা শুটকি ৫০০-৬৫০ টাকা, গইন্না শুটকি ১০৫০-১৬৫০ টাকা, পোয়া শুটকি ৬৫০-১০০০ টাকা, রিডা শুটকি ৪৫০-৫৬০ টাকা, বলাই শুটকি ৭২০ টাকা ও প্রতি পিস ইলিশ শুটকি ১০০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া জাতভেদে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল ৪৬-৫০ টাকা, আটাশ চাল ৫৬ টাকা, বাসমতি চাল ৮২ টাকা, লতা চাল ৫৬ টাকা, পোলাও চাল ১৪০ টাকা, ইরি চাল ৫৬ টাকা, মিনিকেট চাল ৮০ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি ১ নম্বর মসুরি ডাল ১৫০ টাকা, ২ নম্বর মসুরি ডাল ১১০ টাকা, ৩নম্বর মসুরি ডাল ১১০ টাকা, খেসারী ডাল ৯০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, চনা বুট ৯০ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ভাজা মুগ ডাল ১৮০ টাকা, কাঁচা মুগ ডাল ১৪০ টাকা, আটা ৭২ টাকা, ময়দা ৮৫ টাকা, খোলা চিনি ১১০ টাকা, বোতলের ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা, ২ লিটার সয়াবিন তেল ৩৮০ টাকা, ৫ লিটার সয়াবিন তেল ৯০০ টাকা, ৮ লিটার ১৫০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ডিপ্লোমা দুধ ৪২০ টাকা, ১ কেজি ডিপ্লোমা দুধ ৮২০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ডানো দুধ ৪৪০ টাকা, ১ কেজি ডানো দুধ ৮৮০ টাকা ও ৫০০ গ্রাম মার্কস দুধ ৪৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল খোলাটা ১৫০ টাকা, প্রতি কেজি হলুদের গুড়া ২৪০ টাকা, মরিচের গুড়া ৪০০ টাকা, ধনেগুড়া ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মাছের দাম একই রয়েছে। তবে কয়েকটি মাছের দাম কেজি প্রতি ৫-১০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ইলিশ ৪০০-১২০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৫৫০-১৮০০ টাকা, আইর মাছ ৬০০-১০৫০ টাকা, পোয়া ৪০০-৪৫০ টাকা, রিডা মাছ ৫০০-৫৪০ টাকা, শোল মাছ ৭৫০-৮৫০ টাকা, টাকি মাছ ৪০০ টাকা, কৈ মাছ ২১০ টাকা, বাইলা মাছ ৫৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১৫০ টাকা, রুই মাছ ২৯০-৩০০ টাকা, বাইর মাছ ৫৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা গফুর মিয়া বলেন, শীতের শুরু থেকেই বাজারে প্রচুর শাকসবজির সরবরাহ হওয়ায় আগের তুলনায় দাম কমেছে। গত কয়েকদিন ধরে সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিম বিক্রেতা নাফিস আলম বলেন, ডিমের দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অপরিবর্তিত। তবে আমাদের বেচাকেনা আগের মতোই রয়েছে। তার পরিবর্তে ডিম বিক্রি আরও কমেছে। আগে দৈনিক ৫০০০-৮০০০ টাকার ডিম বিক্রি করতে পারলেও এখন দৈনিক ২৫০০-৩৫০০ টাকার ডিমও বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
শাকসবজি কিনতে আসা জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে শাকসবজির দাম আগের তুলনায় কমেছে। তাই ব্যাগ ভরে বাজার করে নিয়ে যাচ্ছি।
হাজী আহসান উল্লাহ বাজারের সহ-সভাপতি মো.আব্দুল হাই জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে শাকসবজির সরবরাহও আগের তুলনায় বেশি। তবে বেশিরভাগ শাকসবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া কয়েকদিন ধরে বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও বেশি রয়েছে।
রাশেদুল ইসলাম রাজু/জেএস/এমএস