অকৃতকার্য প্রতিবন্ধী জুলিয়ার খাতা পুনর্মূল্যায়ন পেলো জিপিএ-৫

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ০৭ জানুয়ারি ২০২৩

প্রাথমিক ফলাফলে অকৃতকার্য হলেও পুনর্মূল্যায়নে জিপিএ-৫ পেয়েছে জুলিয়া আক্তার (১৮) নামের এক বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী।

জুলিয়া আক্তার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালি গ্রামের প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলামের মেয়ে। শিখা আর শিলা নামে তার আরও দুই বোন রয়েছে। একমাত্র ছেলে রাতুল (১২) ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। মাঠে ১০ শতক চাষযোগ্য জমি রয়েছে তাদের। এ জমি আর অন্যের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চলে নজরুলের। এমনকি নজরুল ইসলাম তিনিও ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। ১০ বছর বয়স হবার পর সামান্য কথা বলতে পেরেছেন। এজন্য স্কুলে যেতে পারেননি। যে কারণে তার পড়ালেখা হয়নি। জুলিয়া আক্তারের পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে তিনি পড়ালেখা করাচ্ছেন। গ্রামের স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণি পাশ করে জুলিয়া শহরের সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করেন। এ বছর কারিগরি বোর্ডের অধীনে জুলিয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর জানতে পারে রসায়ন বিষয়ে ফেল হয়েছে। বাংলায়-এ, বাকি সবগুলো বিষয়ে এ+ পেয়েছে। এ ফলাফলে কান্নায় ভেঙে পড়ে জুলিয়া। পরে খাতা পুনর্মূল্যায়নের পর ২৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ পায় সে।

প্রতিবেশী আলেয়া খাতুন বলেন, প্রতিটি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসলে আমরা খোঁজ নিতাম। কথা বলতে না পারায় মাথা ঝাঁকিয়ে বলে পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। প্রথমে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর জানতে পারি আমাদের মেয়ে ফেল করেছে। এটা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না। কারণ সে লেখাপড়ায় খুব ভালো।

জুলিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে লেখাপড়া শিখাতে কষ্ট হয়েছে। প্রতিবন্ধী মেয়ে লেখাপড়ায় খুব ভালো দেখে লেখাপড়া করালাম।

কালীগঞ্জ সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম মিঠু বলেন, আমরা তার মঙ্গল কামনা করছি। সে বড় হয়ে চাকরি করতে চায়।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।