দ. আফ্রিকার সড়ক দুর্ঘটনা

পাঁচ বাংলাদেশির বাড়িতে শোকের মাতম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ১২:০৯ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

অডিও শুনুন

ইসমাইল হোসেন। ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলি গ্রামের আব্বাস ব্যাপারী বাড়ির শরিয়ত উল্যাহর ছেলে। ১১ বছর আগে পরিবারের সচ্ছলতা আনতে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। দুই-তিন মাস পর বাড়ি আসার কথা ছিল তার। বাড়ি এলেই বিয়ে হবে তার। দুদিন আগে সর্বশেষ স্বজনদের সঙ্গে কথা হয় ইসমাইলের। সে তখন জানায়, বড় আয়োজনে বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তার ও পরিবারের স্বপ্ন।

আরও পড়ুন: বাবা-ছেলেসহ নিহত ৫

ইসমাইলের বাবা শরীয়ত উল্লাহ কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তার বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কয়েক জায়গায় পাত্রী দেখা হয়েছে। আমাদের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এরআগে সে লাশ হয়ে গেল।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ আমার ছেলেকে হারিয়েছি। তবে তার মরদেহটি যেন দ্রুত দেশে ফেরত আনা হয় সে উদ্যোগ নিন।

ইসমাইলের বড় ভাই মিজানুর রহমান বলেন, আমার ভাই কারো সঙ্গে কোনো ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়নি। সহজ-সরল প্রকৃতি ছিল সে। তার মৃত্যুতে আমরা বাকরুদ্ধ।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এক সপ্তাহ আগে দেশে ফেরা নিহতের ছোট ভাই নিজাম উদ্দিন বলেন, ওখানে ব্যবসা শুরু করেন বড় ভাই। ব্যবসা দেখাশোনার জন্য আমাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা তার দোকানে হামলা করে তাকে গুলিও করে কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমার ভাই বেঁচে যায়। কিন্তু মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ভাই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: নিহত ৫ বাংলাদেশির বাড়ি ফেনী

একইভাবে দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মমারিজপুর গ্রামের দীন মোহাম্মদ রাজু (৩৩), জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল পোপেল (৩৫), সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুরের আবুল হোসেন (৪৫) ও নাজিম হোসেন (১০) পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন জানান, খবর শুনে ইসমাইলের বাড়িতে ফেনী জেলা প্রশাসক ও ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমরা ছুটে যাই। স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করি।

এ বিষয়ে ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের বাড়িই ফেনীর বিভিন্ন উপজেলায়। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিহতদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের খোঁজ খবর নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে লরিচাপায় একই পরিবারের বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও দুজন।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।