ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসা সুপার অবরুদ্ধ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদী দারুচ্ছুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আবু জাফরের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার (৫ মার্চ) সকালে স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা সুপারের বিচারের দাবিতে তাকে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ মাদরাসার সুপার আবু জাফরকে তালা ভেঙে উদ্ধার করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা জানান, গত বৃহস্পতিবার মাদরাসা সুপার আবু জাফর নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার সহপাঠী ও অভিভাবককে জানায়। এ ঘটনার বিচার দাবিতে রোববার সকালে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মাদরাসা ঘেরাও করে সুপারকে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে গাংনী থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে সুপারকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসা সুপার আবু জাফর তাদের কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। তবে নিজেদের সম্মানের কথা ভেবে কেউ এতদিন মুখ খোলেনি। গত বৃহস্পতিবার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন সুপার। এরপর অন্য ছাত্রীরাও তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করে।
করমদি গ্রামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাইদুর রহমান বলেন, সুপার আবু জাফর চরিত্রহীন। তিনি ছাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। এর আগেও এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে তাকে জুতার মালা পরিয়ে মাদরাসা চত্বর ঘোরানো হয়। তারপর ক্ষমা চাওয়ায় তাকে মাদরাসায় আসার সুযোগ দেয় কর্তৃপক্ষ। এবার আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।

করমদি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবকের মাধ্যমে খবর পাই। ছাত্রীর মুখে ঘটনার বিস্তারিত শোনার পর অন্য অভিভাবকদের জানানো হয়। পরে মাদরাসায় আসলে সুপার আবু জাফর ঘটনাটি অস্বীকার করেন। এতে অন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ফুঁসে উঠে মাদরাসা ঘেরাও করে সুপারকে তালাবদ্ধ করে রাখে।
তবে মাদরাসা সুপার আবু জাফর দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা এবং সব সাজানো নাটক। তাকে অপসারণের জন্য স্থানীয় লোকজন পরিকল্পিতভাবে এ অভিযোগ করছেন।
করমদী দারুচ্ছুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি খাতুন বলেন, ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ এবং কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসিফ ইকবাল/এমআরআর/জেআইএম