সন্ধ্যায় স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, রাতে লাশ মিললো স্বামীর

নেত্রকোনার মদনে লালন মিয়া (১৯) নামের এক রিকশাচালকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি মদন পৌরসদরের জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভিক্ষু মিয়ার ছেলে।
রোববার (১৯ মার্চ) রাতে নিজ ঘরে পড়ে ছিলেন লালন মিয়া। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাতমাস আগে পারিবারিকভাবে জেলার খালিয়াজুরি উপজেলার লেপসিয়া গ্রামের তালেব মিয়ার মেয়ে জনিফা আক্তারকে (১৮) বিয়ে করেন লালন মিয়া। বিয়ের কিছুদিন পর জীবিকার তাগিদে স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে তিনি ঢাকায় চলে যান। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়।১৫ দিন আগে বাড়িতে এসে রিকশা চালানো শুরু করেন লালন।
স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে থাকায় রোববার বিকেলে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় স্ত্রীকে মারধর করেন লালন। পরে রাত ৯টার দিকে স্ত্রী জনিফা আক্তারের চিৎকারে পরিবারের লোকজন এসে দেখতে পান, নিজ ঘরেই মাটিতে পড়ে আছেন লালন মিয়া। তাকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণ করেন।
লালনের স্ত্রী জনিফা আক্তার বলেন, ‘রোববার বিকেলে তিনি আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হলে আমাকে মারধর করেন। পরে আমি অন্য বিছানায় শুয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই, আমার স্বামী মাটিতে পড়ে আছেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।’
নিহতের বড় ভাই ফুল মিয়া বলেন, লালনের স্ত্রীর চিৎকার শুনে আমরা তার ঘরে যাই। গিয়ে দেখি লালন মাটিতে পড়ে রয়েছে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান, মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, লালনের গলায় একটি মোটা দাগ রয়েছে। কিন্তু ঘরের মধ্যে ফাঁস লাগানো বা কোনো দড়ি-কাপড় ঝোলানো নেই।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসাদ বলেন, মরদেহের গলায় একটি মোটা দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বলেন, মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনার আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচ এম কামাল/এসআর/জিকেএস