৩ বছরেও হয়নি সেতু

নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় পালিয়েছেন ঠিকাদার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০২৩

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার পাহাড়পুর বাজারসংলগ্ন মগড়া নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। দুই বছর আগে কাজ বন্ধ করে চলে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজের মেয়াদকালও শেষ হয়ে গেছে। কবে নাগাদ নির্মাণকাজ শেষ হবে তা বলতে পারছেন না কেউ। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর পাহাড়পুর-মঙ্গলসিধ সড়কের পাহাড়পুর বাজারসংলগ্ন মগড়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৮ টাকা। পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে ‘তালুকদার নির্মাণ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজের মেয়াদকাল ধরা হয় এক বছর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুই বছরের বেশি সময় চলে গেলেও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। সব মিলিয়ে সেতুর কাজ হয়েছে মাত্র ৩৫ শতাংশ।

jagonews24

সেতুটি না হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি চরমে। বর্ষাকালে নৌকায় আর শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে নদী পার হতে হয় পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, কামতলা, স্বরমুশিয়া, সুনই, আটিকান্দা, পোখলগাঁও, মোবারকপুর, বানিয়াজান, ছয়াশিসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষকে।

সরেজমিন দেখা যায়, নদীর দুই পাশের পিলারসহ নদীর মধ্যে দুই জায়গায় দুটি করে মোট চারটি পিলার নির্মাণ করা আছে। তাতে বেরিয়ে আছে রড। সেতু নির্মাণের কোনো সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। সেখানে ঠিকাদারের লোকজন বা কোনো শ্রমিক নেই। সেতু সংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ীসহ শতাধিক লোকজন সাংবাদিক দেখে জড়ো হন। এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে কামতলা গ্রামের কলেজশিক্ষার্থী রাহিদুল ইসলাম, কৃষক সবুজ মিয়া, বিষ্ণুপুরের বিল্টু মিয়া, পাহাড়পুরের জলিল মিয়া, বাজারের ব্যবসায়ী রিপন মিয়া, সাইফুল মিয়াসহ অন্তত ২৫ জন জাগো নিউজকে জানান, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ করে ঠিকাদার চলে গেছেন। এরপর থেকে আর কেউ এসে খোঁজ নেননি। পিলার নির্মাণের সময় নিম্নমানের কাজ হয়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও কাজ হয়নি।

jagonews24

শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে কথা হয় সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তালুকদার নির্মাণের স্বত্বাধিকারী সেলিম তালুকদারের সঙ্গে। মোবাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘কাজটি আমি নিজে করিনি। আমার লাইসেন্স দিয়ে কেন্দুয়ার দীপক ব্যানার্জি ও আলয় বাবু নামের দুজন ব্যক্তি বাস্তবায়ন করছেন। আগে কাজের গতি ভালো ছিল। কিন্তু করোনায় নির্মাণসামগ্রীর দাম প্রচুর বেড়ে যাওয়ায় এখন কাজ বন্ধ আছে। সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করা হয়েছে। বর্ষা শেষ হলে আবার কাজ শুরু করা হবে।’

এ নিয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে দীপক ব্যানার্জির ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

jagonews24

জেলা এলজিডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম শেখ ফোন ধরেননি। তবে আটপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আল মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘মগড়া সেতুর কাজটি নিয়ে ঠিকাদার খুবই ভোগাচ্ছে। একাধিকবার সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।’

এইচ এম কামাল/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।