ইফতার-সেহরির সময়ও থাকে না বিদ্যুৎ
ঝিনাইদহে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। ইফতার, তারাবিহ ও সেহরির সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় সেচযন্ত্র ঠিকমতো চলছে না। এতে ফসলি জমিতে সেচকাজও ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, জেলায় চাহিদার তুলানয় বিদ্যুৎ কম সরবরাহ করা হচ্ছে। এজন্য দিনে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে।
এদিকে, জেলার প্রতিটি এলাকাতেই এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
ঝিনাইদহ শহরের বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, রমজানের শুরু থেকে কিছুটা লোডশেডিং থাকলেও এখন তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। দিন-রাত মিলে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। ইফতার, তারাবিহ ও সেহরির সময় বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে রাতের খাবার খাওয়াসহ অন্য কাজ করতে হচ্ছে।
পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. লতিফ মিয়া বলেন, দিনের বেলায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়াতে যতটা ভোগান্তি হয় রাতে তা কয়েকগুণ বাড়ে। রোববার রাতেও ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কয়েকবার ঘুম থেকে উঠে বাইরে যেতে হয়েছে। এছাড়া সেহরি খাওয়ার সময়ও বিদ্যুৎ ছিল না।
তিনি আরও বলেন, লোডশেডিংয়ে শিশুরা বেশি সমস্যায় আছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে তারা ঘুম থেকে উঠে গরমে কান্নাকাটি করে।
শহরের মুদি ব্যবসায়ী মো. কালাম বলেন, দিনেরাতে যে কতবার বিদ্যুৎ গেছে তার কোনো হিসাব নেই। রাতে বিদ্যুৎ না থাকলে ঘুম হয় না। সারারাত জেগে থেকে সারাদিন কি কাজ করা যায়?
মডার্ন মোড় এলাকার বাসিন্দা ফয়েজ বলেন, বারবার বিদ্যুৎ অফিসে কল দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায় না। গ্রাহকদের সমস্যা যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো বিষয়ই না। নিজেদের মতো করে বিদ্যুৎ দেওয়া-নেওয়া করাই তাদের কাজ। অফিসে কল দিলেও কোনো কাজ হয় না।
তিনি আরও বলেন, কিছুক্ষণ পরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে ঘরের টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটারের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে ইলেকট্রনিক্স জিনিস অকেজো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পৌর এলাকার কৃষক মাহাফুজ বলেন, রোদের কারণে ধানের জমিতে পানি রাখতে হচ্ছে। এজন্য সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়। কিন্তু বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জেলায় পিডিবির বিদ্যুতের চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট কিন্তু আমরা পাচ্ছি ৩৩ মেগাওয়াট। আর পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ১৬৫ মেগাওয়াট, তার বদলে আমরা পাচ্ছি ১০২ মেগাওয়াট। এজন্য দিনে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এমআরআর/এমএস