শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি
বর্তমান-সাবেক সভাপতির সদস্য পদ স্থগিত
শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি মো. আবু সাঈদ ও সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা অভিযুক্ত দুজনের সদস্য পদ স্থগিত করেছে আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে ২৫৫ জন নিবন্ধিত সদস্য আছেন। ভোটের মাধ্যমে প্রতিবছর ১৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাংকে ৬৫ লাখ টাকা এফডিআর করা হয়। এরপর ২০১৯ সাল সাল পর্যন্ত আরও ৬৫ লাখ টাকা এফডিআর করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এফডিআরের ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ও তার লভ্যাংশের ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে। ওই সময় আবু সাঈদ দুবার সভাপতি ও দুবার বার সাধারণ সম্পাদক হন। আর জহিরুল ইসলাম একবার সভাপতি ও দুবার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এবছর পুনরায আবু সাঈদ সভাপতি নির্বাচিত হন। আত্মসাৎ করা টাকার মধ্যে গত সপ্তাহে আবু সাঈদ ৪০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন।
শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিলের এফডিআরের এক কোটি ৩০ লাখ ও এফডিআরের লভ্যাংশের ৫০ লাখ মোটসহ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এফডিআরের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সামনে আসলে আমরা বিভিন্ন ব্যাংকে খোঁজ নেই। কোন ব্যাংকেই আইনজীবী সমিতির নামে এফডিআরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তখন চাপে পড়ে আবু সাঈদ ৪০ লাখ টাকা ফেরত দেন। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ওই দুজনের সমিতির সদস্য পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঘটনাটি তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সভায় আলোচনা হবে।
আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, মূলত আমি সভাপতি থাকাকালে মাঝেমধ্যে আবু সাঈদ আমার কাছে এফডিআর ম্যাচুরিটি হওয়ার তথ্য আমাকে জানিয়ে চেকসহ বিভিন্ন কাগজে সাক্ষর নিতেন। আমি বিষটি যাচাই করিনি। পরে প্রমাণিত হয় যে, সবকিছুই নকল করেছিলেন আবু সাঈদ। ঘটনাটি জানাজানি হলে তিনি টাকা ফেরত দেবেন বলে জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ৪০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। আর এ অনিয়ম জালিয়াতির সম্পর্কের সাথে আমার কোন সহমত নেই।
জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, আসলে আমার কাছে আমার একাউন্টে এফডিআর এর টাকা ছিল ৪৯ লাখ। সেই টাকা আমি তুলে আইনজীবী সমিতির সদস্যদের উপস্থিতিতে দিয়ে দিয়েছি।বাকি কোন টাকার বিষয়ে আমি এখন বলতে পারবো না। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্তই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।তার পরে বলা যাবে।
এসজে/জিকেএস