টাকার অভাবে অনিশ্চিত নাজমুলের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২৩

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের নজরুল-ফাহিমা দম্পতির বড় ছেলে নাজমুল হোসেন। তিনি চলতি বছর গুচ্ছসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না।

নাজমুল ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪ দশমিক ৫ পেয়ে এসএসসি এবং কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন।

নাজমুলের মা গৃহিণী। বাবা নজরুল পেশায় দর্জি। অন্যের দোকানে কাপড় সেলাই করে চলে তার সংসার। অভাব অনটনের সংসারে ছেলের ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। ছেলের স্বপ্ন পূরণে বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন এই অসহায় বাবা-মা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাজমুল চলতি বছরের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পরীক্ষাগুলোয় ভালো ফলাফল করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৮০তম স্থান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৪০৭তম, গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরীক্ষার ফলাফলে ৬৬৬তম স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অপেক্ষমাণ তালিকায় তার নাম রয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে নাজমুলের।

নাজমুল হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা জাহাঙ্গীরনগরে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু অর্থাভাবে সে ইচ্ছা পূরণ হবে কি না জানি না। কারণ, আমাদের একটা গরু ছিল সেটা বিক্রি করাসহ এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। কোচিংয়ে বেতন ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে যাওয়া-আসায় সেই টাকা শেষ হয়ে গেছে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা থেকে শিক্ষা বৃত্তি পেলে হয়তো আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার স্বপ্ন পূরণ হতো।

নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, আমার নিজের কোনো জমিজমা নেই। শ্বশুরবাড়িতে থাকি। একটি দর্জির দোকানে কাজ করি। সেখান থেকে যা পাই তা দিয়ে কোনোরকমে চলে পাঁচজনের সংসার চলে। ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন কীভাবে পূরণ করবো।

তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, নাজমুল ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়ে আসছে। ওর বাবা একটি দর্জির দোকানে কাজ করেন। এতদিন অনেক কষ্টে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন। আমাদের সবার প্রচেষ্টা থাকলে নাজমুলের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। নাজমুলের স্বপ্ন পূরণে যে কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

ফজলুল করিম ফারাজী/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।