নিষেধাজ্ঞা-বৈরী আবহাওয়া

‘এভাবে চলতে থাকলে ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবে না’

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
প্রকাশিত: ০৫:৫১ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২৩
বৈরি আবহাওয়ায় আলীপুর মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া জেলে মনির

‘একবার সাগরে যেতে আমাদের চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়। নিষেধাজ্ঞার পর ২০ লাখ টাকা খরচ করেছি। মাছ বিক্রি করেছি মাত্র আড়াই লাখ টাকার। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ভিক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

এভাবেই জেলেদের বর্তমান দুরাবস্থার কথা জানাচ্ছিলেন এফ ভি তমা ট্রলারের মাঝি মো. মনির। তিনি ভোলার বাসিন্দা। স্থানীয় এক মালিকের ট্রলারের দায়িত্ব নিয়ে ২৫ জন স্টাফসহ মাছ শিকার করেন তিনি। সাগর উত্তাল হওয়ায় বুধবার (২ আগস্ট) পটুয়াখালীর আলীপুর মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন তারা।

‘এভাবে চলতে থাকলে ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবে না’

আরও পড়ুন: উত্তাল সমুদ্র, শূন্যহাতেই নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছে মাছ ধরার ট্রলার

মনির বলেন, ‘আমরা ভোলার জেলে। সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে গত ১০ দিনে দুইবার উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ি। আজকে আমরা মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি। এইবার সমুদ্রে নেমে তিনদিন ছিলাম। এর আগে ছিলাম মাত্র দুইদিন। তার আগে ছিল ৬৫ দিনের অবরোধ। জেলে জীবনের এই ২০ বছরে প্রথমদিকে কিছুটা স্বস্তিতে মাছ শিকার করতে পারলেও এখন প্রতিনিয়ত সংকটে পড়তে হচ্ছে।’

‘এভাবে চলতে থাকলে ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবে না’

এই মাঝি বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া এবং সমুদ্রে মাছ না হওয়ার প্রভাব শুধু ট্রলার মালিকদের ওপরই পরে না। আমরা যারা জেলে রয়েছি তাদের ওপর অনেকটা পড়ে। আমরা সংসার চালাতে এনজিও থেকে ঋণ নিই সমুদ্রে মাছ শিকার করে শোধ করার আশায়। কিন্তু যখন মাছ হয় না তখন ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে আবার ঋণ নিতে হয়।‘

মনির আক্ষেপ করে বলেন, ‘সরকার জেলেদের অনেক সহযোগিতা করে। কিন্তু প্রকৃত জেলেদের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছায় না। তাই আমাদের দাবি, সরকার যেন এই জেলে পেশাটাকে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্ব সহকারে নজর দেয়।’

‘এভাবে চলতে থাকলে ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবে না’

শুধু মনিরই নয় জাগো নিউজের কাছে তাদের দুর্ভোগের কথা জানান আ. মমিন, শাহাদাত, কুদ্দুসসহ অনেক জেলেই।

আরও পড়ুন: তিন দিনের মাথায় ফের খালি হাতে ফিরতে হলো জেলেদের

গত ২৩ জুলাই রাতে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ শিকারে নামেন জেলেরা। কিন্তু তার ঠিক দুই দিনের মাথায় সমুদ্র উত্তাল হলে ২৫ জুলাই বিকেল থেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে হয় তাদের। এরপর গত শুক্রবার আবারও মাছ শিকারে যান জেলেরা। তবে ফের তিন দিনের মাথায় বৈরি আবহাওয়ার প্রভাবে ফিরে আসতে হয়েছে জেলেদের।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।