ভুক্তভোগী অর্ধশত খামারি

খালি চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে মামলা করেন ডিলার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ব্ল্যাঙ্ক (খালি) চেক জমা নিয়ে বাকিতে পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধ বিক্রেতা এক ডিলারের বিরুদ্ধে পোলট্রি খামারিদের নামে মিথ্যা মামলা করে অভিযোগ হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

খামারিদের অভিযোগ, জিম্মা রাখা এসব চেকে মোটা অংকের টাকা বসিয়ে মামলা করেছেন ওই ডিলার। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) পাকুন্দিয়া উপজেলার মঠখোলা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা।

উপজেলার অর্ধশত খামারির নামে প্রায় ১০ কোটি টাকার চেক ডিসঅনার মামলা করা হয়েছে বলে জানান পোলট্রি খামার মালিকরা। তাদের ভাষ্য, বিশ্বাস ভঙ্গ করে ওই ডিলার খালি চেকে ৮০ লাখ থেকে শুরু করে আড়াই কোটি টাকা পর্যন্ত টাকার অংক বসিয়ে তাদের নামে মামলা করেছেন।

jagonews24

আঙ্গিয়াদী গ্রামের পোলট্রি খামারি দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘বাহাদিয়া বাজারের পোলট্রি ফিড ও ওষুধ ব্যবসায়ী কোয়ালিটি ফিডের ডিলার মো. আসাদুজ্জামানের কাছে নিজের সই করা খালি চেক ও স্ট্যাম্প জমা রেখে বাকিতে পোলট্রি খাদ্য ও মেডিসিন কিনতাম। একপর্যায়ে কিছু টাকা বকেয়া পড়ায় আমার সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেন ডিলার আসাদুজ্জান। গত ৬ আগস্ট আমার নামে দুই কোটি ৫০ লাখ ও স্ত্রী সোমা আক্তারের নামে দেড় কোটি টাকার চেক ডিসঅনার হয়েছে মর্মে মামলা দায়েরের জন্য উকিল নোটিশ পাঠান তিনি।’

দ্বীন ইসলাম ছাড়াও কামারকোনা গ্রামের আবুল কালামের নামে ৮২ লাখ ৭০ হাজার, বারাবর গ্রামের আতিকুর রহমানের নামে ৯৬ লাখ ২০ হাজারসহ অন্তত ৫০ জন খামারির নামে মোটা অংকের চেক ডিসঅনার মামলা করেছেন ডিলার আসাদুজ্জামান।

এগারসিন্দুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বাবু বলেন, ডিলার আসাদুজ্জানের চেক প্রতারণার বিষয়টি এলাকার সবাই জানে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকেও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ছোট খামারিরা ডিলার আসাদুজ্জামানের কাছ থেকে বাকিতে খাদ্য ও ওষুধ কেনেন। একপর্যায়ে কয়েক লাখ টাকা বকেয়া পড়ে গেলে তিনি খামারিদের কাছ থেকে সই করা খালি চেক ও স্ট্যাম্প জমা রাখেন। বলা হয় বকেয়া টাকা পরিশোধ করে এগুলো ফেরত নিয়ে যেতে। একপর্যায়ে খামারিদের কাছে বাকিতে পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধ বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে চেকে নিজের ইচ্ছামতো চেকে টাকার অংক বসিয়ে মামলা করেন ডিলার আসাদুজ্জমান।’

jagonews24

তবে খালি চেক ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প জমা রেখে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোয়ালিটি ফিড কোম্পানির ডিলার মেসার্স বাহাদিয়া পোলট্রি ফিড অ্যান্ড মেডিসিনের মালিক মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, বকেয়া টাকার বিপরীতে দেওয়া চেক ডিসঅনার হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিরোধের জের ধরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র চলছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।

এসকে রাসেল/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।