মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ

অভিযানে ডিবির ওপর এলাকাবাসীর হামলা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৬:২৬ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভৈরবে আসামি ধরতে গিয়ে এলাকাবাসীর হামলার শিকার হয়েছেন কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের সদস্যরা। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে পৌর শহরের মাদক এলাকা হিসেবে খ্যাত কমলপুর পঞ্চবটি মহল্লায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। এ সময় দুজনকে আটক করে তারা।

আটকরা হলেন- পঞ্চবটি এলাকার জহির মিয়ার ছেলে নাঈম মিয়া (১৯) ও সেন্টু মিয়ার ছেলে মো. বিশাল (১৮)।

স্থানীয়রা জানান, পুকুরপাড় এলাকায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডিবি পুলিশ প্রথমে কাকলী নামে এক নারীর ঘরে তল্লাশি করে। তিনি স্থানীয় এক রিকশাচালকের স্ত্রী। এ সময় সেখানে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক নাঈম ও বিশাল মিয়াকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে স্থানীয়রা ডিবি পুলিশের কাছে জানতে চাই কেন নীরিহ দুই ছেলেকে আটক করলো। তারা দুজনই এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ডিবির দাবি তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

এ সময় এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে ডিবি পুলিশের তর্কবিতর্ক হতে থাকে। ধীরে ধীরে এলাকাবাসী জড়ো হয়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ডিবি পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় এলাকাবাসী ধৃত দুজনকেও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে আসামি নিয়ে থানায় চলে যান ডিবি পুলিশ সদস্যরা।

স্থানীয় বাসিন্দা লতিফা বেগম, মনোয়ারা বেগম, রমজান মিয়া ও আশা বেগম জানান, প্রতিদিনের মতো নাঈম ও বিশাল তার কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গেম খেলছিল। হঠাৎ নাঈম ও বিশালকে ডিবি পুলিশের এসআই মকবুল হোসেন, নূর মোহাম্মদ, এএসআই আশরাফুল, পুলিশ কনস্টেবল শারমিন শিলা, জহির মিয়া ও রিয়াজ মিয়া আটক করে। এ সময় এলাকার লোকজন ডিবি পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করে ছেলে দুটি ভালো এবং ছেড়ে দিতে বলে। কিন্তু ডিবি পুলিশ এলাকার লোকজনের সদুত্তোর না দিয়ে উল্টো এলাকাবাসীর ওপর চড়াও হয়। এতে করে বাধে বিপত্তি। এ সময় ডিবি পুলিশের পরণে ইউনিফর্ম কিংবা অ্যাপ্রোন ছিল না।

jagonews24

নাঈম একজন টাইলস্ মিস্ত্রি ও বিশাল একজন ওয়ার্কসপ মিস্ত্রি। এর আগে ডিবি পুলিশ এক রিকশাচালকের ঘরে অভিযান চালিয়ে রিকশা কেনার নগদ লক্ষাধিক টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে আসে বলেও জানান তারা।

এলাকাবাসী আরও অভিযোগ করে বলেন, ডিবি পুলিশ দুদিন পর পর পঞ্চবটি এলাকায় অভিযান চালায়। এ অভিযানকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু প্রায় সময়ই তারা নীরিহ মানুষদের মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

তবে হামলার বিষয়টি এড়িয়ে যান কিশোরগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের এসআই নূর মোহাম্মদ। তিনি কাকলীর ঘর থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল নেওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেন।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা পঞ্চবটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বকুলকে আটক করতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিশাল মাদক ব্যবসায়ী বকুল বেগমের ছেলে ও নাঈম তার সহযোগী। আমরা অভিযানে বিশাল ও নাঈমের কাছে এক বোতল ফেনসিডিল ও ৩ বোতল স্কাফ উদ্ধার করি। নাঈম ও বিশালকে আটকের সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে ভৈরব থানায় নাঈম, বিশাল ও বকুল বেগমকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, ডিবি অভিযানের বিষয়ে আমি জানি না।

রাজীবুল হাসান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।