ফরিদপুরে এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড ৬ গ্রাম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ১১:০৮ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২৩

মাত্র এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দুটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়েছে কমপক্ষে তিনশতাধিক গাছ। খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকেই খোলা আকাশের নিচে ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। তবে ঝড়ে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও টগরবন্ধ ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে এমন ক্ষতি হয়। এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম-পরিচয় ও তালিকা পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: রাজশাহীর সড়কে জাল ফেলে মাছ ধরার উৎসব

jagonews24

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারাদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে ফরিদপুরে। এরমধ্যে দুপুর সোয়া ৩টার দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় মাত্র এক মিনিটেরও কম সময় স্থায়ী ছিল। তাতেই উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর, ব্রাহ্মণ-জাটিগ্রাম, বেজিডাঙ্গা, অপরদিকে টগরবন্ধ ইউনিয়নের মালা, কৃষ্ণপুর-টগরবান, তিতুরকান্দি গ্রামের ঘর, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নষ্ট হয় ফসলি জমি।

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে একটানা বৃষ্টিতে স্থবির জনজীবন

বিদ্যাধর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকেই সারাদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি। বিকেলের দিকে হঠাৎ এক মিনিটের মতো সময়ে ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের ২০-৩০টি কাঁচাপাকা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে গেছে। এরমধ্যে ঝড়ের আগে থেকেই বিদ্যুৎ বন্ধ।

jagonews24

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নের তিন গ্রামের বেশকিছু পরিবারের বাড়ি ক্ষতি হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তার চেষ্টা করা হচ্ছে।

টগরবন্ধ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করা হয়। টগরবন্ধ ইউনিয়নে তিনটি গ্রামের ৬০-৭০টি কাঁচাপাকা বাড়িঘর ও কয়েকশ গাছপালা ভেঙে উপড়ে পড়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্তরা আপাতত আশপাশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জে শহরজুড়ে হাঁটুপানি

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হকের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

jagonews24

তবে আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, সারাদিনই প্রচণ্ড বৃষ্টি। বিকেলের দিকে এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে দুই উপজেলার ছয়টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচাপাকা ও বাড়িঘর ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। খবর পেয়ে উদ্ধারকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। বৃষ্টির মধ্যেই উদ্ধার কাজ করা হয়। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চারদিন সময় লাগতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই ঘরবাড়ি ছাড়া খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের নিরাপদ স্থান ও আশপাশের এলাকায় অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। পুরো এলাকা জুড়ে অন্ধকার। আগামীকাল সকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হবে। প্রাথমিকভাবে কারো নাম-পরিচয় জানানো সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন। আগামীকাল সকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।