ডাক্তার সেজে শিশুদের গুঁড়াদুধ খাওয়ানোর পরামর্শ, সাংবাদিক দেখে দৌড়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:৪৭ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

‘শিশুদের মাতৃদুগ্ধের বিকল্প নেই’—এমন কথা বিভিন্ন সময় সরকারিভাবে প্রচার করা হলেও উল্টো চিত্র দেখা গেলো মুন্সিগঞ্জে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে (ইপিআই)। জেলা সদরের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় টিকাদান কর্মসূচিতে শিশুদের প্যাকটজাত গুঁড়াদুধ খাওয়াতে উদ্ধুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, বেসরকারি কোম্পানির প্রতিনিধিরা টিকা কার্যক্রমে উপস্থিত থেকে তাদের কোম্পানির গুঁড়াদুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। আর এ কাছে সহযোগিতা করছেন স্বাস্থ্যকর্মী।

jagonews24

তথ্য পেয়ে কেন্দ্রটিতে গিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে দৌড়ে পালিয়ে যান বেসরকারি কোম্পানির একজন রিপ্রেজেনটেটিভ। রোববার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

দুপুরে হাটলক্ষ্মীগঞ্জ বেসরকারি জুনিয়র স্কুলে দেখা যায়, জন্ম থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। শিশুদের নিয়ে উপস্থিত আছেন মায়েরা। সেখানে শিশুকে ‘বায়োমিল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাকেটজাত গুঁড়াদুধ খাওয়াতে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন গিয়াসউদ্দিন নামের একজন রিপ্রেজেনটেটিভ। প্রশ্ন করতেই তিনি প্রথমে নিজেকে স্বাস্থ্যকর্মী পরিচয় দেন। পরে আরও প্রশ্ন করতেই হাতে থাকা কাগজপত্র পকেটে ভরে দ্রুত বের হয়ে যান রুম থেকে। কিছুটা এগিয়ে দৌড়ে কেন্দ্রের স্থান ত্যাগ করেন।

jagonews24

সন্তানকে টিকা দিতে নিয়ে আসা সোহাগী নামের এক মা বলেন, ‘আমার শিশুকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছিলাম। টিকার দেওয়ার পর আমাকে বললো, গুঁড়াদুধ খাওয়াতে। আমিতো ভাবছিলাম উনি ডাক্তার। পরে আপনারা আসার পর চলে গেলেন।’

বিষয়টি স্বীকার করে বায়োমিল কোম্পানির জেলা মার্কেটিং অফিসার রাজীব আহমেদ বলেন, ‘মাতৃদুগ্ধের বিষয়ে অনেক আইন রয়েছে। আমাদের ওই প্রতিনিধির টিকাদান কর্মসূচিতে যাওয়া ঠিক হয়নি।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জে পৌরসভার নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা লিনা শাহা বলেন, ‘এভাবে গুঁড়াদুধ খাওয়ার পরামর্শের এখতিয়ার তাদের নেই। বিষয়টি পৌর নির্বাহী অফিসারকে জানানো হবে।’

jagonews24

জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই রিপ্রেজেনটেটিভকে সরিয়ে দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের যদি ক্যাম্পেইন করার দরকার হয় আলাদা করবে। আমাদের কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে না।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুরুল আলম বলেন, কোনো কোম্পানির লোকজন যদি এটা করে থাকেন তাহলে তা অবৈধ। তবে পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি সিভিল সার্জন অফিস থেকে মনিটরিং হয় না। তাহলে তাদের তলব করা যেতো। তারপরও বিষয়টি পৌর মেয়রকে জানাবো।

আরাফাদ রায়হান সাকিব/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।