অভিযোগের শেষ নেই শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল নিয়ে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৬:০৬ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

নানা সমস্যায় জর্জরিত ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শরীয়তপুর সদর হাসপাতালটি। চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেড়েছে দালালের দৌরাত্ম্য। আছে চিকিৎসক ও জনবলের তীব্র সংকট। বেড়েছে চুরিও।

অভিযোগ আছে, চিকিৎসকের সঙ্গে অস্ত্রোপচারে অংশ নিচ্ছেন বহিরাগতরাও। আবার চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলায় রোগীর মৃত্যুও ঘটছে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে অবস্থা এমন বেহাল হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনা

১৪ নভেম্বর দুপুর ১২ টা বেজে ৪৪ মিনিট। সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এক ব্যক্তির পাইলসের অস্ত্রোপচার করছেন জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. কাজী শাহ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। এ সময় তার সঙ্গে ছুরি-কাঁচি হাতে অস্ত্রোপচারে অংশ নিতে দেখা যায় জালাল নামের এক ব্যক্তিকে। আদতে জালাল নামের ওই ব্যক্তি হাসপাতালের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন। তিনি ডা. কাজী শাহ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেন। যার কাজ হচ্ছে রোগীদের সিরিয়াল মেইনটেন করা।

বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমানকে জানানো হলে তিনি অপারেশন থিয়েটার থেকে জালাল নামের ওই ব্যক্তিকে বের করে আনেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা সরকারি লোগো সম্বলিত একটি পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। যা তিনি বাইরের একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে তৈরি করেছেন।

এ বিষয়ে জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. কাজী শাহ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, আমি যখন এ হাসপাতালে জয়েন করি তখন আমার একজন সাহায্যকারী হিসেবে জালালকে সঙ্গে রাখি। করোনাকালে যাতায়াতের সুবিধার্থে হাসপাতাল থেকে আমাদের এবং সহযোগীদের জন্য কম্পিউটারের দোকান থেকে পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। অপারেশন করতে গেলে রোগীদের ওঠানো-নামানো, প্রস্তুত করানো, গজ ব্যান্ডেজ কাটার জন্য অন্ততপক্ষে চারজন লোকের দরকার পড়ে। কিন্তু এখানে সেই জনবল নেই বলেই আমি সহযোগীকে নিয়ে কাজ করছি।

জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের লোকবল সংকটের কারণে কনসালট্যান্টদের সহযোগী দিতে পারিনি। তারা নিজেরাই সহযোগী নিয়ে নিয়েছেন। তাদের এসব সহযোগীদের কাজ হচ্ছে রোগীদের সিরিয়াল দেখা বা চা এনে দেওয়া। কিন্তু রোগীর চিকিৎসাগত কোনো কাজে সহযোগিতা করা বা হাত দেওয়ার যোগ্যতা তাদের নেই। তারা এ কাজ করতে পারবে না। যদি চিকিৎসকরা চিকিৎসায় তাদের ব্যবহার করে এক্ষেত্রে রোগীদের কোনো সমস্যা হলে তার দায়-দায়িত্ব ওই চিকিৎসককেই নিতে হবে।

jagonews24

হাবিবুর রহমান আরও বলেন, জালাল নামের ওই ব্যক্তি আমাদের লোক না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে তাকে এই হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো কীভাবে তিনি সরকারি লোগোযুক্ত পরিচয়পত্র বহন করছেন। এছাড়াও তার মতো অন্য কেউ এ ধরনের কার্ড ব্যবহার করছেন কি না তাও খতিয়ে দেখবো। পরবর্তীতে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হবে।

চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু

২৯ অক্টোবর ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের মজিবর হাওলাদার (৬৫) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে সাপে কাটলে সদর হাসপাতালে আনা হয়। তবে চিকিৎসক নেই এমন অজুহাতে তাকে সাপে কাটার অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়নি। উপায় না দেখে মজিবর হাওলাদারকে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নেওয়ার পরে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে এলে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ তিনজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে তদন্ত করা হলে মজিবর হাওলাদারের চিকিৎসায় চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়টির সত্যতা মেলে।

মজিবর হাওলাদারের মেয়ে জামাই সুমন দেওয়ান অভিযোগ করে বলেন, শ্বশুরকে অসুস্থ অবস্থায় সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক নেই বলে ভ্যাকসিন দেয়নি। তারা যদি তখন ভ্যাকসিন দিতো তাহলে হয়তো আজ তিনি বেঁচে থাকতেন। চিকিৎসকের অসহযোগিতার কারণেই তিনি মারা গেছেন।

ধানকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা (রতন) জাগো নিউজকে বলেন, মজিবর ভাইয়ের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়ার মতো নয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত নার্স বলেন ডাক্তার দুপুরের খাবার খেতে গেছেন আপনারা অপেক্ষা করেন। একজন সাপে কাটা রোগীকে নিয়ে অপেক্ষা করলে তিনি কীভাবে বাঁচবেন। পরে বাধ্য হয়ে জরুরি সেবার নম্বরেও কল দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হলে সেখানে চিকিৎসকের কিছুটা অবহেলার বিষয় প্রমাণিত হয়। আমরা তাদের সতর্ক করে দিয়েছি যাতে ভবিষ্যতে এমনটা আর না ঘটে। আমাদের হাসপাতালে সাপে কাটার চিকিৎসা এবং চিকিৎসক দুটোই আছে।

চিকিৎসক-জনবলের তীব্র সংকট

১৯৮৫ সালের ১৬ মার্চ সদর উপজেলার তুলাসার মৌজায় ৫ একর ৮৩.১৩ শতাংশ জমির ওপর চালু হয় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল। এরপর ১৯৯০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। তবে চিকিৎসক ও তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণীর তীব্র জনবল থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

jagonews24

হাসপাতালের নথিপত্র থেকে জানা যায়, ১০০ শয্যার এ হাসপাতালে চিকিৎসক দরকার ৫২ জন। কিন্তু এর বিপরীতে সব মিলিয়ে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৩৩ জন। ফাঁকা পদের সংখ্যা ১৯টি। এদের মধ্যে সিনিয়র কনসালট্যান্টের পদ সবচেয়ে বেশি ফাঁকা। সিনিয়র কনসালট্যান্ট ১১ জন প্রয়োজন থাকলেও এর বিপরীতে আছেন মাত্র চারজন।

অন্যদিকে জুনিয়র কনসালট্যান্ট ১৪ জনের বিপরীতে আছেন মাত্র সাতজন। এছাড়া হাসপাতালে ৭৬টি নার্সের পদের বিপরীতে আছেন ৬৮ জন। এদের মধ্যে ছয়জন সিনিয়র নার্স ও একজন সহকারী সেবক প্রেষণে কর্মরত আছেন। ফাঁকা আরও আটটি পদ। এছাড়া দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ৭৮টি পদের মধ্যে ২২টি পদ শূন্য।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের বিষয়টি চিঠি লিখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি জানেন।

বেড়েছে চুরি, বাচ্চা হারানোর শঙ্কায় রোগীরা

শরীয়তপুর জেলা সদর হাসপাতালে চোরদের উৎপাত বেড়েছে। অধিকাংশ সময় এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের খোয়া যাচ্ছে টাকা, মোবাইল ফোন, ওষুধ সামগ্রীসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। একদিকে শয্যায় সংকট থাকায় রোগীর চাপ ও চিকিৎসা বিড়ম্বনা প্রকট অন্যদিকে হাসপাতালের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো থাকায় রোগীদের ভিড়ে বেড়েছে চোর চক্রের উৎপাত। এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

ফারিসতা নামের ১১ মাসের শিশু বাচ্চার ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে ২১ অক্টোবর সকালে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন সদর উপজেলার ডলি আক্তার নামের এক গৃহবধূ। দিনগত রাত ১টা অবধি জেগে থেকে মালামাল পাহারা দেন তিনি। ভোরে শিশু বাচ্চাকে নিয়ে কক্ষের বাইরে একটু হেঁটে আবারো বেডে গিয়ে শুয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর রুমে ঢুকে ঝাড়ু দিয়ে বের হয়ে যান হাসপাতালের এক আয়া। এরপর থেকেই তার ভ্যানিটি ব্যাগ খোয়া যায়। তার ব্যাগের মধ্যে ছিল ২৬ হাজার টাকা, ভোটার আইডি কার্ড ও সোনালী ব্যাংকের একটি এটিএম কার্ড।

ডলি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের ওই আয়া ঝাড়ু দিয়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই আমার ব্যাগটি গায়েব হয়ে যায়। হাসপাতালের কক্ষে সিসিটিভি না থাকায় দেখতেও পারছি না কীভাবে ব্যাগটি চুরি হয়েছে। বিষয়টি হাসপাতালের লোকজনকে জানালে উল্টো তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আয়ার ব্যাগ নেওয়ার বিষয়ে যদি উপযুক্ত প্রমাণ দিতে না পারি তাহলে আমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে।

একই দিনে সদর উপজেলার কাশিপুর থেকে তাসকিন নামের একমাস বয়সী এক শিশুর চিকিৎসা নিতে আসেন মোরশেদ সরদার। তিনি বলেন, তিনদিন তাসকিনকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। ভোরে আমার পাশে থাকা ব্যাগ থেকে ৩ হাজার টাকা, তাসকিনের প্যামপারস ও ওষুধ নিয়ে যায় চোর। গ্রাম থেকে চিকিৎসা করাতে অল্পকিছু টাকা নিয়ে আসি। এভাবে যদি চোররা সবকিছু নিয়ে যায় আমরা কীভাবে চলবো?

সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের আচুড়া এলাকা থেকে আসা আছিয়া বেগম নামের এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। প্রাইভেটে চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই বলেই সদর হাসপাতালে এসেছি। এখানে আসার পর রাতে আমার ব্যাগ থেকে ৫ হাজার টাকা আর একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। এভাবে যদি টাকা পয়সা চুরি হয়ে যায়, যেকোনো সময় আমাদের বাচ্চা শিশুও চুরি হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতু আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতাল থেকে তিনজন রোগীর স্বজনদের টাকা পয়সা ও মালামাল খোয়া যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। হাসপাতালে রোগী ও তাদের স্বজনদের মূল্যবান জিনিসপত্র তাদের নিজ দায়িত্বে রাখার কথা। হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে তবে সবগুলো সচল নয়। হয়তো ওই ওয়ার্ডের সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। সিসিটিভি অকেজো হওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমরা চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

বেড়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য

৯ নভেম্বর ১৮ মাসের শিশু সাইমার পেটে সমস্যা নিয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে ছুটে আসেন নড়িয়া উপজেলার প্রিয়াঙ্কা আক্তার। হাসপাতালে আসার পর থেকেই কয়েকজন লোক প্রিয়াঙ্কাকে ঘিরে ধরেন এবং বাচ্চাটির রক্ত পরীক্ষা করতে হবে বলে জানান। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী দেখছিলেন চিকিৎসক ডা. শরিফ উর রহমান। তিনিও শিশুটির ভর্তি না দিয়েই হাসপাতাল গেট এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে রক্ত পরীক্ষা করে আনতে বলেন। প্রিয়াঙ্কা আক্তার সেখানে রক্ত পরীক্ষার জন্য গেলে ১৫০০ টাকা চাওয়া হলে পুনরায় হাসপাতালে ডা. শরিফ উর রহমানের কাছে ছুটে আসেন। তাকে বিষয়টি জানালে আবারো রক্ত পরীক্ষা করে আনতে বলেন না হয় হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে বাধ্য হয়ে রক্ত পরীক্ষা করে আনলে শিশুটির ভর্তি নেওয়া হয়।

এদিকে ভর্তির পর শিশুটিকে দেখে হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মিজানুর রহমান জানান রোগীর অবস্থা না দেখেই রক্ত পরীক্ষার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

প্রিয়াঙ্কা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমি হাসপাতালে আসার পর থেকে তিনজন লোক আমার পেছন পেছন ঘুরতে শুরু করে। বার বার আমার বাচ্চাটিকে ভর্তি নেওয়ার কথা বললেও জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বাবুকে না দেখে হাসপাতালের সামনের ক্লিনিক থেকে রক্ত পরীক্ষা করে আনতে বলেন। রক্ত পরীক্ষা ছাড়া তিনি ভর্তি নেবেন না বলে জানান। পরে বাধ্য হয়েই হাসপাতালের মেইনগেটের পাশ থেকে আমার বাচ্চার রক্ত পরীক্ষা করাই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বড় ডাক্তার এসে জানান আগেই রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল না।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. শরিফ উর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমি বাচ্চাটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে পাঠিয়েছি। পাশাপাশি কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়েছি। পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলোর প্রয়োজন ছিল বলেই দিয়েছি। এছাড়া আমি কোনো নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করে আনতে বলিনি। রোগীদের যেখান থেকে ইচ্ছে পরীক্ষা করে নিয়ে আসতে পারেন। এর জন্য আমি কেন দায়ী হবো। তারা শুধু শুধু অভিযোগ দিয়েছেন।

তবে হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, অন্য দিনের মতো আমি রোগী দেখে যখন সাইমা নামের এক শিশুকে দেখি তখন তার ফাইলের সঙ্গে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টটি দেখতে পাই। আমি জিজ্ঞেস করলে তখন তারা আমাকে বিষয়টি জানায়। পরীক্ষাটি ডায়রিয়ার বাচ্চাদের প্রয়োজন হয়, তবে সেটা রোগী ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসা ও ওষুধপত্র দেওয়ার পর যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে। সাইমা নামের এই বাচ্চাটিকে আমি দেখেছি, তবে সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির ওই পরীক্ষাটি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ডা. শরিফ উর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। আমিও নিজেও তার প্রতি বিরক্ত হয়ে পড়েছি। এর আগেও তাকে অন্যসব দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ওটিতে কাজ করার জন্য দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে অন্য চিকিৎসকদের জন্য আর পারিনি। এখন তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি আর তাকে রাখবো না। তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

বিধান মজুমদার অনি/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।